বগুড়া পৌরসভার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৪২ কোটি টাকার বাজেট

Slider রাজশাহী

মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ-প্রকল্প খাত এবং উন্নয়ন খাত মিলিয়ে প্রায় ১৭১ কোটি টাকা সম্ভাব্য আয় ধরে বগুড়া পৌরসভার ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৪২ কোটি ৫৭ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮১ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। এ বাজেট গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১১০ কোটি টাকা বেশি।

বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা গত সোমবার, ১০ জুলাই, বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা করেন। বাজেট অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন, বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম ও বিশেষ অতিথি ছিলেন- বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।এছাড়া অতিথি ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক মাসুম আলী বেগ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব শাহরিয়ার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীনেশ সরকার, পৌরসভার প্যানেল মেয়র পরিমল চন্দ্র দাস, আলহাজ শেখ, প্যানেল মেয়র ৩ শিরিন আকতার, ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবিরাজ তরুণ চক্রবর্তী, ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুর রহমান আরিফ, পৌরসভার অর্থ কমিটির প্রধান রোস্তম আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বাবলু, প্রবীণ ব্যক্তিত্ব ডা. সিএম ইদরীস, ডা. মশিহুর রহমান, বগুড়া প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রেজাউল হাসান রানু, জলেম্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডনিস বাবু তালুকদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বগুড়ার সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না, সাংবাদিক রাহাত রিটু, এম আর শাহিন, বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হামিদ মিটুল, জিয়া হক জিয়া, গোপাল তেওরী, বিধান সাহা প্রমুখ।পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বাজেট অধিবেশনে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বগুড়া পৌরসভার বাজেটে রাজস্ব খাতে সম্ভাব্য আয় ৭০ কোটি ৪১ লাখ ৪৩ হাজার ২৯১ টাকা। এ খাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮ কোটি ৯৭ লাখ ২১ হাজার ২৫৯ টাকা।এছাড়াও পানি খাত থেকে সম্ভাব্য আয় দেখানো হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ৫১ হাজার ৫০০ টাকা এবং ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এছাড়াও বাজেটে প্রকল্প খাতে সম্ভাব্য আয় ১৩৮ কোটি ৮৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৯০ টাকা এবং উন্নয়ন খাতে সম্ভাব্য আয় ধরা হয়েছে ৩২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এই দুই খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৭১ কোটি টাকা।বগুড়া পৌরসভার বার্ষিক বাজেটে স্বাধীনতা চত্বর নির্মাণ, রাস্তা ও ড্রেনের উন্নয়ন, মহিলাদের জন্য গণশৌচাগার নির্মাণ, হরিজন কলোনী নির্মাণ, আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ, ঈদগাহের উন্নয়ন, আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠের উন্নয়ন, শহরের প্রবেশ পথে শুভেচ্ছা তোরণ নির্মাণ, পৌর মার্কেট ও হাটবাজারের উন্নয়ন, পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন, যানজট নিরসন, রাস্তা আলোকিতকরণ, মশক নিধন, ভেজাল বিরোধী অভিযান, বৃক্ষরোপণ, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখাসহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন পৌর মেয়র।বাজেটে অতিরিক্ত কর নির্ধারণ করা হয়নি। তবে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় আনার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। বাজেট অধিবেশনে পৌর মেয়র করতোয়া নদী পুনঃখনন, নাব্যতা ফিরে আনাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।বাজেট অধিবেশনের প্রধান অতিথি বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, আমরা সকলেই বগুড়ার উন্নয়ন চাই। বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ হলেই পূর্ণ কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি বলেন, শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে যাতে আন্তর্জাতিক খেলা হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আলাদা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে।তিনি বলেন, বগুড়া পৌরসভা সিটি কর্পোরেশন না হলেও গোল্ডেন পৌরসভা। তিনি বগুড়া পৌরসভার জন্য একটি মাস্টার প্লান করার তগিদ দেন এবং ভবিষ্যতে মাস্টার প্লান অনুযায়ী কাজ করার আহবান জানান। এছাড়া বহুতল ভবনের অনুমোদন এবং অনুমোদিত বহুতল ভবন অপসারণে পৌর কর্তৃপক্ষের জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, জেলা প্রশাসন এ ক্ষেত্রে পৌরসভাকে সহায়তা করবে।

জেলা প্রশাসক বগুড়ার উন্নয়নে বগুড়ার মেয়রকে যে কোন সহায়তা প্রদান এবং প্রয়োজনে নিজে মন্ত্রণালয়ে যাবেন বলেও উল্লেখ করেন। পৌরসভার বাজেট অধিবেশনে ফুটপাত এবং রাস্তা দখল করে দোকান করা, রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং না করা, কাঁঠালতলা থেকে বাজার অপসারণ করার প্রতি জোর দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *