ময়লা পানিতে নেমে অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা শামীম ওসমানের

Slider গ্রাম বাংলা


নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, ‘গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে ডিএনডি অভ্যন্তরে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা থেকে স্থানীয়রা পরিত্রাণ না পেলে নিজেই ময়লা পানিতে নেমে অবস্থান ধর্মঘট করব। আমি একাই সেটা করব। কাউকে সঙ্গে নিয়ে নয়, আমার সঙ্গে কোন লোক থাকবে না। জামাকাপড় পরেই আমি নিজে ময়লা-আবর্জনার পানিতে নেমে যাব। যতক্ষণ পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান না হবে ততক্ষণ পর্যন্তই আমার ধর্মঘট চলবে। মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তিনি আমার কাছে কয়েকদিন সময় চেয়েছেন, তা না হলে আমি আজকেই পানিতে নেমে যেতাম।’

আজ রোববার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডিএনডি অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতার খোঁজ নিতে এসে শিমরাইল এলাকায় ডিএনডি পাম্প হাউজে এসব কথা বলেন শামীম ওসমান।

এ সময় শামীম ওসমান আরও বলেন, ডিএনডি এলাকার প্রায় ৩০ লাখ লোক পানি বন্দি হয়ে আছে। কিছু কিছু কালভার্ট দেরিতে নির্মাণ হচ্ছে এবং সেসব জায়গায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে বলে এই পানি জমছে। এখন বর্ষার সময় বৃষ্টি হবে।

এ সময় তিনি জলাবদ্ধতার সমস্যার সমাধান কিভাবে এবং কত সময়ের মধ্যে হবে তা জানতে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্ন করেন। শামীম ওসমানের এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে শিমরাইল পাম্প হাউজে উপস্থিত পানি উন্নয়ণ বোর্ডের নির্বাহী প্রোকৌশলী খন্দকার মাইনুর রহমান বলেন, ‘আসলে পুরো প্রকল্প এলাকায় আসলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় নাই। কিছু কিছু জায়গায় প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এই সমস্যাটার সৃষ্টি হয়েছে। যেসব স্থানগুলোতে কাজ চলছে সেখানে আমরা বিকল্প যাতায়াত ব্যবস্থা ও পানি প্রবাহের ব্যবস্থা রেখেছি। কিন্তু গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের কারণে এই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এসব সমস্যার কারণে আমরা এই প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিটরা ঈদের ছুটিও বাতিল করে কাজ করছি। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে আজকে ( ২ জুলাই) সন্ধ্যার আগেই এই জলাবদ্ধ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পারে ডিএনডিবাসী।’

প্রকল্পের কাজ কতদিনের মধ্যে শেষ করা হবে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রকল্পটির নির্মাণ শেষ করার জন্য আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করেছি। যদিও সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পক্ষ থেকে প্রকল্পটি ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। আমরা আশা করছি যতটুকু কাজ বাকি আছে তার বেশির ভাগ কাজ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার একটি সিডিউল ইতোমধ্যে তৈরি করেছি। তবে ডিসেম্বরে কাজ শেষ আনুসঙ্গিক আরও কাজের জন্য আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।’

এই প্রকেল্পর জন্য নতুন করে অর্থ বৃদ্ধি করা হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নতুন করে এই প্রকল্পে আর অর্থ বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই এবং আমাদেরও প্রয়োজন নেই। উপরন্তু যেই পরিমাণ অর্থ বরাদ্ধ আছে কাজ শেষ হওয়ার পর আরও উদ্বৃত্ত অর্থ থাকবে।’

এ সময় শামীম ওসমান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ডিএনডি অভ্যন্তর এলাকার জলাবদ্ধতার খোঁজ নেন এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে এক মেগা প্রকল্পের শুরু হয়। প্রথমে এই প্রকল্পের জন্য ৫৮২ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এই প্রকল্পের কাজের কারণে বরাদ্ধ বাড়িয়ে করা হয় প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৭৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *