টঙ্গীতে পুলিশের হাতে আটক ৯ শিশু জানেনা ঈদ কবে যায়-আসে

Slider গ্রাম বাংলা
Exif_JPEG_420

টঙ্গী: নিজের নাম বলতে পারে। বাবা ও মায়ের নাম এবং ঠিকানা সঠিক ভাবে বলতে পারে না। রাতে ঘুমায় পরিত্যক্ত ভবনে। দিনের বেলায় ক্ষুধার জ্বলায় অপরাধ করে বেড়ায়। এই ধরণের ৯জন শিশুকে ধরে এনে পুনর্বাসন কেন্দ্রে দিল পুলিশ। এই ৯জন সহ মোট ১১৮জন শিশুকে পুনর্বাসিত করল টঙ্গী পূর্ব থানা
পুলিশ।

বৃহসপতিবার বেলা ১২টায় টঙ্গী পূর্ব থানায় ওসির রুমে সোফায় বসে কফি খাচ্ছিল ওই ৯ শিশু। ওসি জানালেন এরা চুরি ছিনতাই সহ নানা ধরণের অপরাধের সাথে যুক্ত। এদেরকে টঙ্গীর এরশাদনগরস্থ শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষন ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে দেয়া হবে। টঙ্গীর স্টেশন রোড সহ বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকা থেকে ধরে আনা হয়েছে।

সুমন বয়স ১৬ বছর। বাড়ির ঠিকানা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। সৌরভ(১২) বাড়ি ময়মনসিংহের বালিয়াপাড়ায়। হৃদয়(১২) বাড়ি সিলেট জেলার নামা পাড়ায়। নবী হোসেন বাড়ি বরিশাল। ফিরোজ মিয়া(১৩) বাড়ি কুমিল্লা। আরিফ(১২) বাড়ি বান্দরবন। বাবু(১২) বাড়ি সিলেট। ইয়াসিন(১২) বাড়ি নংসিংদীর বেপারী পাড়ায়। মাহমুদ(১০) বাড়ি কুমিল্লার বিশ্ব রোড। শিশুরা বলে, তারা ঈদ কবে যায় আসে জানে না। ঈদের সময় ভালোমন্দ খাবারও জোটে না তাদের কপালে।

এই ছিন্নমূল শিশুরা বাবা মা ছাড়াই টঙ্গীর স্টেশন রোড আব্দুল্লাহপুর সহ নানা বস্তিতে সারাদিন ঘুরাফেরা করে রাতে বিভিন্ন পরিত্যক্ত ভবনে ঘুমায়। নদীর ময়লাযুক্ত পানিতে গোসল করে। ছিনতাই করে কাপাড়-চোপড় সংগ্রহ করে পরিধান করে। ঈদ কবে যায় কবে আসে তা তারা বলতে পারে না। এরকম অসংখ্য শিশু শহরের আনাচে কানাচে পড়ে আছে। তাদের দেখার কেউ নেই। পরিচর্যার অভাবে তারা আজ টোকাই,, তারা রোমিও, তারা ছিন্নমূল শিশু। মানুষ যখন ভালমন্দ খায় তখন তারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে। এতে তাদের রাগ হয়। হিংসে হয়। তখন তারা ছোট ছোট অপরাধ থেকে বড় ধরণের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। কখনো হয়ে উঠে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। টঙ্গী থানা পুলিশ এই ধরণেল উঠতি বয়সী অপরাধপ্রবণ শিশুদের এনে পুনর্বাসক করছে অনেক দিন ধরেই।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আশররাফুল ইসলাম পিপিএম জানালেন, এই ৯জন নিয়ে মোট ১১৮জনকে পুনর্বাসন করেছেন তিনি। শিশুরা যেন অপরাধে জড়িয়ে না পরে তারা যেন প্রশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষিত হয়ে সমাজে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এই জন্য তিনি এই কাজ গুলো করছেন। এই সকল শিশুকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে দিলে তারা ভালো খাবার দাবার পোষাক পরিচ্ছেদ পাবে। তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত হয়েও গড়ে উঠবে। আর ছোট
ছোট অপরাধীর সংখ্যাও কমে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *