ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে উপজেলা বিএনপির কর্মীসভা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাক-বিতণ্ডা হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ১২জন আহত হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে পৌর সদরের পাঞ্জারী একাডেমি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতাদের উপস্থিতে সকাল ১০টায় কর্মীসভা শুরু হয়। এ সময় পুলিশ এসে সভাটি বন্ধ করতে বলেন। এতে সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ১০ মিনিট সময় বেধে দেয়। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীরা বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়লে ঢাকা টাইমসের বোয়ালমারী প্রতিনিধি আমীর চারু বাবলুসহ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী আহত হন। এ সময় সভাস্থলে থাকা নেতাকর্মীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। লাঠিচার্জে বোয়ালমারী সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস শুকুর শেখ, যুবদল নেতা ইমরান হোসেনসহ বেশ কয়েজন নেতাকর্মীর আহত হন।
বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম কামাল মিয়ার সভাপতিত্বে কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান (মাশুক)। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা, সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম। ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ. কে. এম কিবরিয়া স্বপন। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম ও পৌর বিএনপির সভাপতি শেখ আফসার উদ্দিন প্রমূখ।
সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষকদলের সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘একটি দলের ইঙ্গিতে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা চালায়। যুগপদ আন্দোলনকে সামনে রেখে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আমরা কর্মী সমাবেশের আয়োজন করেছিলাম।’
এ ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, ‘পুলিশের থেকে পূর্ব অনুমতি নিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলছিল। তারপরও সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে সভা বন্ধ করে দেয়। পুলিশের লাঠিচার্জে আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দ জানাই।’
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, আজ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এই দিনে বিএনপি কর্মিসভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাদেরকে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলা হলেও বিএনপি নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠান চালিয়ে যায়। এ সময় সভাটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতেই পুলিশ এ কাজ করেছে। সেখানে কাউকে লাঠিপেটা করা হয়নি।