আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীকে তিন মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি ও আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। নিপুণ রায়ের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আজ জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন- সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় চৌধুরী ও মিথুন রায় চৌধুরী। আর রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট অমিত তালুকদার।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স ও হুইল চেয়ারে আদালতে আসেন নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্যসচিব নিপুণ রায়। মাথায় ব্যান্ডেজ-হাতে ক্যানুলা নিয়েই আদালতে হাজির হন তিনি।
মাথায় ব্যান্ডেজ-হাতে ক্যানুলা নিয়েই আদালতে নিপুণ রায় চৌধুরী
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত শুক্রবার কেরানীগঞ্জে ঢাকা জেলা বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বিএনপির অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা প্রথমে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করলে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
সংঘর্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নিপুণ রায় চৌধুরীসহ উভয় পক্ষের ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার গুরুতর আহত হয়ে মাথায় ছয়টি সেলাই নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে মামলার খবর পান অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘পুলিশের উপস্থিতিতে জিনজিরায় আমাদের সমাবেশ পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হামলা করেছে।’
নিপুণ রায় আরও বলেন, ‘হামলাকারীদের আমাদের নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিয়ে হটিয়ে দেয়। এ সময় আমাদের নেতাকর্মীদের ফিরিয়ে আনতে গেলে তখন আমার মাথায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ইট মারে। আমি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি, আর আমার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়-এর কোনো ভাষা নেই।’
উল্লেখ্য, গত শনিবার কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ঢাকা জেলা সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীসহ দলটির ১০৮ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা ‘অনেক’ আসামি রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলাটি করেন জিনজিরা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি এসএম সুমন। মামলার এজাহারে আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর, হত্যার উদ্দেশ্য মারধর করে গুরুতর জখম, চুরি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়।