সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আসছে সুখবর

Slider জাতীয়


আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সুখবর পেতে যাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। মহার্ঘ ভাতার আদলে তাদের জন্য বেতন বৃদ্ধির (ইনক্রিমেন্ট) ঘোষণা আসতে পারে। মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় নির্ধারিত ৫ শতাংশের বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের বাইরেও অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। এর পরিমাণ মূল বেতনের ১০ থেকে ২০ শতাংশ হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা থাকছে। তবে বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া নির্ধারণের কাজ জুনে বাজেট ঘোষণার পর শুরু হবে। বৈশি^ক সংকটের কারণে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির চাপে নতুন পে-স্কেলের দাবি তোলেন সরকারি চাকরীজীবীরা। এমন প্রেক্ষাপটে আগামী বাজেটে তাদের জন্য মহার্ঘ্য ভাতা ঘোষণার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে শতকরা প্রায় ৪০ শতাংশ। এ সময়ে প্রতিবছর বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট হিসেবে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বেড়েছে মাত্র ৫শ থেকে এক হাজার টাকা। অথচ টাকার হিসাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি।

২০১৮ সালের সুপারিশ অনুযায়ী সরকারকে আপাতত তিনটি ‘বিশেষ ইনক্রিমেন্ট’ ও ‘নবম পে-কমিশন’ গঠনের নির্দেশনা দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলছেন, বর্তমান বেতন স্কেলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের বাজেট আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের শেষ বাজেট। তাই এটাকে নির্বাচনী বাজেটও বলা যায়। এবারের বাজেটে ৮ বছর পর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাজেট ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাওয়ার পর বেতন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তা সমন্বয় করে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে গেজেট জারি হতে পারে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও ১ জুলাই সরকারি চাকরিজীবীরা ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাবেন।

অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতায় সরকারি চাকরিজীবীর মোট পদসংখ্যা ১২.৪৬ লাখ। ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টসহ তাদের বেতন-ভাতা বাবদ আগামী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ থাকছে ৭৭ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু মোট পদের মধ্যে ২.৭০ লাখ পদ শূন্য রয়েছে। ফলে বেতন-ভাতায় বরাদ্দের পুরো অর্থ ব্যয় হবে না। চলতি অর্থবছরের বেতন-ভাতায় বরাদ্দ ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে।

২০১৫ সালে ঘোষণা করা পে-স্কেলে বলা আছে, সরকারি চাকরিজীবীদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্টের হার হবে ৫ শতাংশ। তবে মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশের বেশি হলে সে অনুযায়ী ইনক্রিমেন্টের হারও বাড়বে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। আর গত মে-এপ্রিল ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *