লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে শহীদ নাজমুল হুদার মেয়ের প্রতি আবেদন করতে চাই এবং জাতিকে জানাতে চাই- জিয়াউর রহমান সাহেব ওই সময়ে বন্দি ছিলেন। কোনো অবস্থাতে তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা নন এবং পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে এর সঙ্গে যুক্ত নন। মা, এই কাজটি ভালো করেন নাই।’
কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীরবিক্রমকে হত্যার ঘটনায় গত বুধবার তার মেয়ে নাহিদ ইজহার খানের করা মামলার বিষয়ে আজ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এলডিপি সভাপতি। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
পঁচাত্তরে নভেম্বরে তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তার হত্যার ঘটনায় জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে মামলা ‘নির্বাচনের আগে জনদৃষ্টিকে অন্যত্র সরানোর’ ষড়যন্ত্র বলে মনে করে ড. অলি। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে মানুষের দৃষ্টি অন্য সরানোর জন্য এটি (মামলা) করানো হচ্ছে। মানুষের দৃষ্টি অন্যত্র সরানোর জন্য এটি একটা সুদূর পরিকল্পনা শুরু করেছে। আমরা তাদেরকে বলব, মিথ্যার আশ্রয় নিয়েন না।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তম, কর্নেল নাজমুল হুদা বীরবিক্রম ও লেফটেন্ট কর্ণেল এ টি এম হায়দার বীরউত্তমকে হত্যার প্রায় পাঁচ দশক পর এই মামলা করা হলো। এতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়।
কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নাহিদ ইজহার খান গত বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ
মামলার প্রসঙ্গে এলডিপি সভাপতি বলেন, ‘এতদিন মামলা হলো না, ৪৮ বছর পর হঠাৎ ঘুম ভাঙল এটি (মামলা) করতে হবে। এখানে আমারই প্রশ্ন জাগে, নাজমুল হুদা সাহেবের স্ত্রী তো অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন না? তিনি ওই সময়ে এই মামলা করতে পারতেন। আওয়ামী লীগ তো ক্ষমতায় ছিল ৯৬ সালে, এরশাদের সময়ে মামলায় করতে পারতেন, তখন তিনি কিছু করলেন না। এখন নির্বাচনের আগে এসে এই ধরনের ধোঁয়াশা তুলে জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য এসব করছেন।’
ড. অলি আহমদ বলেন, ‘জাতি এতে বিভ্রান্ত হবে না। জাতি একটা লক্ষ্য স্থির করেছে। এই লক্ষ্য হলো আমাদেরকে চিরদিনের জন্য বর্তমান অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তি লাভ করতে হবে, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে, সব অত্যাচার-নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, মানুষের ন্যূনতম অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করব, আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা যতদূর পারেন আইনের মধ্যে থেকে জনগণকে সজাগ করেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে না, আওয়ামী লীগেরও বিরুদ্ধে না, কোনো দলের বিরুদ্ধে না। আমরা শুধু চাই, আমার ভোট আমি দেব এবং তা নির্বিগ্নে দেব। কোনো অস্ত্রধারী ভোটকেন্দ্রে থাকবে না, কেউ রাত্রিবেলা আমার ভোট কেড়ে নেবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নেয়ামূল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, এম মোরশেদ, সাকলাইন, উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাহ হোসেন মিয়াজি ও আইন সম্পাদক আবুল হাশেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।