এবার দার্জিলিংকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার দাবি উঠছে

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

কলকাতা: ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করে আলাদা দু’টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করার সিদ্ধান্তে উৎসাহিত দার্জিলিংয়ের সব রাজনৈতিক দলই দার্জিলিংকে বিধানসভা-সহ আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। এই দাবিতে কিছুদিনের মধ্যেই যে পাহাড় উত্তপ্ত হতে চলেছে তারও ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। দার্জিলিং থেকে লোকসভায় নির্বাচিত বিজেপির এমপি রাজু সিং বিস্তও এই দাবিতে সহমত জানিয়ে বলেছেন, ২০২৪ সালের মধ্যে পাহাড়ের মানুষের দাবির স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান হবে বলে বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা এবার বাস্তবায়িত হবে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, রাজ্য ভাগ করার চক্রান্ত সফল করতে দেয়া হবে না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জম্মু-কাশ্মীর ভাগের সিদ্ধান্ত দার্জিলিং পাহাড়ের পৃথক রাজ্যের দাবিকে উসকে দিয়েছে। দার্জিলিংকে পৃথক রাজ্য করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং দার্জিলিংকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন।

বিজেপির কাশ্মীর সংক্রান্তকে সমর্থন জানিয়ে গুরুং বলেছেন, বিজেপির এবার উচিত পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। মোদিকে পাঠানো বার্তায় তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আশা করি, দার্জিলিংয়েও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করলে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হবে। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক গুরুংসঙ্গী রোশন গিরি আন্দোলন শুরু করার কথা জানিয়ে বলেছেন, আমরা অনেক বছর ধরে আলাদা গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের জন্য আন্দোলন করছি। বিজেপি তাদের নির্বাচনী ইস্তেহারেও এ ব্যাপারে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গিরি মনে করিয়ে দিযেছেন, এটাই উপযুক্ত সময় আলাদা বিধানসভা সহ কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ঘোষণার। একই ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস ঘনিষ্ট মোর্চার বিনয় তামাং গোষ্ঠিও আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে আলোচনার ডাক দিয়েছেন। বিনয় তামাং পাহাড়ের সব দলকেই আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করার আলোচনায় যোগ দেবার আহ্বান জানিয়েছেন। বিমল গুরুংপন্থী মোর্চার মুখপাত্র বিপি বজগাইও একজোট হওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন। এদিকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাসহ অন্য দলগুলিও আলাদা কেন্দ্রশাষিত অঞ্চল ঘোষণার দাবিতে একমত ঘোষণা করেছে।

১৯৮৫ সাল থেকে আলাদা গোর্খা রাজ্যের দাবিতে পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি আন্দোলন করে আসছে। মাঝে মাঝেই সেই আন্দোলন হিংসাত্মক রূপও নিয়েছে। ২০১৭ সালে আলাদা রাজ্যের দাবিতে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে ১০৪ দিন ধরে টানা বনধ পালিত হয়েছে। এই আন্দোলনে অনেক মানুষ মারাও গিয়েছেন। পরে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোর্চায় ভাঙ্গন ধরিয়ে আন্দোলন স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন। মোর্চার অনুগত গোষ্ঠীকে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিষ্ট্রেশনের ক্ষমতায়ও বসিয়েছিলেন কিন্তু এবার সুযোগ বুঝে পাহাড়ের সব দলই ভাবাবেগকে উসকে দিয়ে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। মনে করা হচ্ছে, এর ফলে পাহাড় ফের অশান্ত হয়ে উঠতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *