গাজীপুর সিটি নির্বাচনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছে। কোন অদৃশ্য চাপে সরে গেছে তা আমি জানি। আমি ন্যায় বিচার চাই। আমি আপিল করব, প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাব। শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।’
রোববার বেলা ১১টার দিকে মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ সব কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করলেও নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম একজন ঋণ খেলাপী হিসেবে আমাদের কাছে তথ্য এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। উনি একজন জামিনদাতা হিসেবে ঋণ খেলাপী। তাই তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে তার আপিলের সুযোগ রয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যেহেতু ব্যাংক টাকা পাবে, ব্যাংকে টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমার নমিনেশন পেপার বাতিল হয়েছে। আমি ন্যায় বিচার চাই। আমি গাজীপুরের মানুষকে রক্ষা করতে চাই। সেজন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিথ্যার জয় হয় না, সত্যের জয় হয়। সত্যের জয়ের জন্য আমি লড়াই করছি। আমি সর্বশেষ পর্যন্ত দেখে যাব। আমি রাষ্ট্র, সরকার, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনের কাছে নিরপেক্ষতার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকায় কোরিয়ান মালিকানাধীন একটি কম্পোজিট কারখানা রয়েছে। ওই কোম্পানির মধ্যে আমার কোনো শেয়ার নেই। কোনো লভ্যাংশও নেই না। তবুও হাজার হাজার শ্রমিক বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের সম্পদ দিয়েছি। সেই কোরিয়ান মালিক লোন নিয়ে কারখানাটি চালু রেখেছে। করোনার কারণে কোরিয়ানরা ব্যাংকে যথাসময়ে ওই পেমেন্ট দিতে পারেনি। আমি প্রার্থী হওয়ার পর গত ১১ এপ্রিল ও ১৮ এপ্রিল কোরিয়ানরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের যে পাওনা ছিল তা পরিশোধ করেছে। কোরিয়ান কোম্পানি ১৭ এপ্রিল অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছে। সেই সমস্ত কাগজপত্র আইনজীবী এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়েছে। তারপরও আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেধ পরিপন্থী কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০২১ সালের নভেম্বরে মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীরকে সাময়িক বহিষ্কার করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। জাহাঙ্গীর আলম তার মেয়র পদ ফিরে পেতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেও কয়েকবার সময় নির্ধারণ করেও এর সমাধান হয়নি।