ঈদের ‘কুশলে’ জনমত বাড়াতে চায় বিএনপি

Slider রাজনীতি

সরকারবিরোধী আন্দোলনে গতি বাড়াতে ঈদুল ফিতরের পর নতুন কর্মসূচি দেবে বিএনপি। এসব কর্মসূচি সফলে নানা পরিকল্পনাও নিয়ে রেখেছে দলটি। বিশেষ করে ঈদের কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে বিএনপির ১০ দফার প্রতি জনমত বাড়াতে চায় দলটি। এ জন্য স্থানীয় নেতা, সাবেক এমপি-মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিদের কাজে লাগাতে চায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এ বিষয়ে তাদের বিশেষ বার্তাও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি ঈদের দিন থেকে তিন দিন জনমত গঠনে কাজ করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগামী দিনগুলোয় দেশবাসীসহ আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এ সরকারের পতন ঘটানোর জন্য সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে নামতে হবে। ভয়ভীতির পরিস্থিতি সৃষ্টি করেও জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে সরকার টিকে থাকতে পারবে না। শেখ হাসিনা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে গেছেন। এখন আমাদের রাজপথে থেকে মোকাবিলা করতে হবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, চলমান আন্দোলন এগিয়ে নিতে ঈদের পর আরও কর্মসূচি দেওয়া হবে। ঈদেও নেতাকর্মীরা জনমত গঠনে নিজ নিজ এলাকায় কাজ করবেন।

বিএনপি সূত্র জানায়, ঈদের পর সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়কসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপি আন্দোলন জোরদার করতে চায়। এ

জন্য এক জেলা থেকে আরেক জেলা এবং এক মহানগর থেকে আরেক মহানগরে রোডমার্চ, লংমার্চ করার প্রস্তাব রয়েছে। আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন চলাকালেও আলাদাভাবে কর্মসূচি ঘোষণার কথা ভাবছে। তবে চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে বৃহত্তর ১৯ জেলায় সমাবেশেরও চিন্তা করা হচ্ছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, জনমত গঠন ছাড়াও আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, গুম, খুন ও নির্যাতনে পঙ্গুত্ববরণ করা এবং কারাবন্দি নেতাকর্মীদের পরিবারের পাশে থাকতেও নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এরই মধ্যে নেতাকর্মীদের ঈদ উপহার পাঠানো হয়েছে। যারা ঈদের দিন নিজ এলাকায় থাকতে পারবেন না, তাদের ঢাকায় ইফতার পার্টি, গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, চা-চক্রসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে হবে।

গতকাল সিরাজগঞ্জে দলের সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমের উদ্যোগে ১২শ মানুষের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করা হয়। বিতরণ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ^রচন্দ্র রায়।

ঈদে কে কোথায় থাকবেন

মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঈদের দিন ঢাকায় নামাজ আদায় করবেন। ঈদের দিন ঢাকায় থাকবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ^রচন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান। মহাসচিবের নেতৃত্বে তারা ঈদের দিন বেলা ১১টায় শেরেবাংলানগরে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করবেন। সন্ধ্যায় বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তারা।

ঈদের দিন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুমিল্লায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে থাকবেন। আইনি জটিলতায় সালাউদ্দিন আহমেদ ভারতের শিলংয়ে এবং শারীরিক অসুস্থতায় ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সিঙ্গাপুর থাকবেন।

ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রামে, বরকতউল্লাহ ও মো. শাহজাহান নোয়াখালীতে এবং মেজর (অব) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ঈদের দিন ঢাকায় থাকবেন। এ ছাড়া সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সবগুলো মামলায় জামিন পেয়েছেন। ঈদের আগে কারামুক্ত হলে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় ঈদ করবেন তিনি।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় এরই মধ্যে ঘুরে এসেছেন। অনেক সিনিয়র নেতা ঢাকায় নামাজ আদায় করে ঈদের দিন নিজ এলাকায় যাবেন, অনেকে ঈদের পরের দিন যাবেন। সে অনুযায়ী নেতারা প্রস্তুতিও নিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *