যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘একমাত্র অপরাধ আমি যেটি করেছি, সেটি হলো যারা আমাদের দেশকে ধ্বংস করতে চায়, তাদের কাছ থেকে দেশকে নির্ভয়ে রক্ষা করেছি।’
গতকাল মঙ্গলবার আদালতের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নিউইয়র্ক থেকে ফ্লোরিডায় চলে আসেন ট্রাম্প। ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোয় নিজ সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন তিনি। সেখানে কড়া ভাষায় বিচার সংশ্লিষ্ট সবার সমালোচনা করেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প বলেন, ‘শুরু থেকে ডেমোক্র্যাটরা (জো বাইডেনের দল) আমার ক্যাম্পেইনের ওপর নজরদারি চালিয়েছে। তারা আমার ওপর তদন্তের হামলা চালিয়েছে।’
বক্তব্যের এক পর্যায়ে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপি করে জো বাইডেন জয় পেয়েছেন বলে আবারও দাবি করেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার প্রশাসনের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা খারাপ। আমাদের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। রাশিয়া চীনের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। আপনারা বিশ্বাস করতে পারেন? সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। যদি আমি আপনাদের প্রেসিডেন্ট থাকতাম তাহলে এর কিছুই হতো না।’
জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘হান্টার বাইডেন নিজের ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ঠিক করাতে দিয়ে সেটি নিতে ভুলে যান। এরপর ওই ল্যাপটপের ভেতর থেকে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। যেসব তথ্য থেকে জানা যায়, হান্টার তার পরিবারের পরিচয় দিয়ে সুবিধা আদায় করে নিতে চেয়েছিলেন। হান্টার ও জো বাইডেনসহ সবাই ‘ক্রিমিনাল পরিবার’।’
নিউইয়র্কের ম্যানহাটন আদালতের জেলা অ্যাটর্নি আলভিন ব্রাগের কড়া সমালোচনা করেন ট্রাম্প। এই আলভিন ব্রাগই ট্রাম্পকে আদালত পর্যন্ত নিয়ে যেতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা করেছেন। অ্যাটর্নি ব্রাগকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেন, ‘আলভিন ব্রাগ একজন ক্রিমিনাল। তার বিচার হওয়া উচিত অথবা তার পদত্যাগ করা উচিত।’
এরপর ম্যানহাটন আদালতের বিচারক জুয়ান মার্চেনের সমালোচনা করেন ট্রাম্প। সাবেক প্রেসিডেন্টের দাবি, তার বিরুদ্ধে এমন একজন বিচারক বিচার করছেন যার পুরো পরিবার ট্রাম্পবিরোধী। তিনি বলেন, ‘আমার একজন ট্রাম্প-ঘৃণাকারী বিচারক আছে সঙ্গে আছে ট্রাম্প-ঘৃণাকারী স্ত্রী ও পরিবার।’
ট্রাম্পের দাবি, বিচারক জুয়ান মার্চেনের স্ত্রী তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে টুইট করেছিলেন। অপরদিকে, তার মেয়ে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের হয়ে কাজ করেছেন।
এর আগে, গতকাল ম্যানহাটানের আদালতে পৌঁছানোর পর ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর বিচারকের সামনে হাজির করা হয়। ট্রাম্পের সঙ্গে তার আইনজীবীরাও ছিলেন।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, আদালতে শুনানিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। পরে সার্বিক প্রক্রিয়া শেষে তিনি আদালত চত্বর ছেড়ে যান।
ট্রাম্পই প্রথম সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হলেন। খবর: আল জাজিরা ও সিএনএন