রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের মামলায় গত ৫ মার্চ জামিন পাওয়া বুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. নিখিল রঞ্জন ধরকে ১৫ দিন পর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মামলার ধার্য দিনে আজ সোমবার জামিন চেয়ে আদালতে হাজির হন ড. নিখিল। তবে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট রেজাউল করিম চৌধুরী জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ গত ৫ মার্চ প্রথমে জামিন নামঞ্জুর করে সাক্ষ্য পাঠানোর আদেশ দেন। কিন্তু অন্য কোনো আবেদন ছাড়াই ২০ মিনিট পর আবার জামিন মঞ্জুর করেন ওই বিচারক।
ওই দিন ড. নিখিলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ হওয়ার পর বিচারক এজলাস থেকে নেমে খাস কামরায়ও চলে যান। আদেশের পর ড. নিখিল আসামির কাঠগড়া লোহার খাঁচার মধ্যেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর ২০ মিনিট পর বাড্ডা থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক রণপ কুমার বিচারকের খাস কামরা থেকে বের হয়ে জামিন মঞ্জুরের বিষয়টি জানান।
এর আগে এ মামলায় প্রশ্নফাঁসের হোতা আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক (পিয়ন) দেলোয়ার হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ড. নিখিলের নাম বলেন। এরপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় ড. নিখিলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। সেই সঙ্গে ‘পলাতক’ ড. নিখিলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও জোনাল টিমের এসআই শামীম আহমেদ আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন।
গত বছরের ১০ নভেম্বর এই তদন্ত কর্মকর্তা ড. নিখিলকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। সেখানে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, আদালতে দেওয়া আসামি দেলোয়ারের জবানবন্দি অনুযায়ী ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ড. নিখিলের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার বিষয়ে জড়িত থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ জন্য তার বিরুদ্ধে মামলার দায় প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।
অপর আসামিরা হলেন প্রশ্নফাঁসের হোতা আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মুক্তারুজ্জামান রয়েল, কর্মী রবিউল আউয়াল, জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল, রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলন, পূবালী ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র আব্দুল্লাহ আল জাবের ওরফে জাহিদ, পারভেজ মিয়া, মিজানুর রহমান মিজান, মোবিন উদ্দিন, সোহেল রানা, ছাত্র রাইসুল ইসলাম স্বপন, রাশেদ আহমেদ বাবলু, জাহাঙ্গীর আলম জাহিদ ও রবিউল ইসলাম রবি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর দুপুর ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১ হাজার ৫১১টি পদের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় পাঁচ ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষার পর চাকরিপ্রত্যাশীদের অনেকেই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তোলেন।