ঈদের পরে সর্বাত্মক আন্দোলন : খালেদা জিয়া

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ রাজনীতি সারাবিশ্ব

52341_IMG_9819
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: জনগণকে সাথে নিয়ে ঈদের পর ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

সোমবার ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার ইফতারপূর্ব অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন।

খালেদা জিয়া বলেন, দেশের আজ কী অবস্থা? এখন কোনো বৈধ সরকার নেই। জোর করে অবৈধ সরকার ক্ষমতায় বসে আছে। দেশ এখন মহাবিপদ ও সঙ্কটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। অবৈধ সরকার জোর করে ক্ষমতা নিয়ে সব কিছু লুট করে খাচ্ছে। চারদিকে সন্ত্রাস, লুটতরাজ আর খুন-গুমের রাজত্ব কায়েম করেছে।

তিনি বলেন, ঈদের পর জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন, জনগণ আমাদের সাথে আছে। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।

একইসাথে গত রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিজয় স্মরণীর কাছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহেদ চৌধুরীকে র‌্যাব-পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ‘গুম’ করতে চেয়েছিলো বলে অভিযোগ করেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

তিনি বলেন, গতকাল (রোববার) গণমাধ্যমের সন্মানে আমার দেয়া ইফতার অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতিকে সরকারের গুন্ডাবাহিনী র‌্যাব-পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন গুম করতে চেষ্টা করেছিলো। জনগণের প্রতিরোধের মুখে তিনি রক্ষা পেয়েছেন। গুম-খুন-লুটপাট করে এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

রাজধানীর মতিঝিলে হোটেল পূর্বানীতে গতকাল জাগপার আয়োজনে এই ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এতে জোটের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন।

ইফতারের আগে খালেদা জিয়া অনুষ্ঠানের বিভিন্ন টেবিলে গিয়ে শরিকদলের নেতৃবৃন্দের সাথে কুশল বিনিময় করেন। পরে বাংলাদেশসহ মুসল্লিম উম্মার শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মুনাজাত হয়।
ইফতারপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে সরকার গুম-খুন, লুটপাট-দুর্নীতি করছে। মানুষের কল্যাণ ও দেশের উন্নয়নের তাদের কোনো নজর নেই।
তিনি বলেন, দেশে বেকারত্ম বাড়ছে। কর্মসংস্থানের অভাব। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস। সড়ক-মহাসড়কের দুরাবস্থা। কিন্তু সেদিকে সরকারেরর কোনো নজর নেই। তারা অপশাসণ চালিয়ে লুটপাট করছে।
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্যের জনগনের নাভিশ্বাস উঠেছে। তা নিরসনে সরকারের কোনো নজর নেই। রাজধানীর রাস্তা-ঘাটের কি অবস্থা। ঢাকার সড়ক ও হাইওয়ের রাস্তাঘাট যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। সেদিকে তাদের কোনো নজর নেই।
নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের আসামীদের ‘জামাই আদরে’ রাখা হয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, এর সুষ্ঠু বিচার এই সরকার করবে না। ক্রিমিনালদের জামাই আদরে রাখা হয়েছে। তাদের যদি সত্যিকারভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো, তাহলে উপরতলার অনেকে ফেঁসে যাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীও নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনরে দায় এড়াতে পারবেন না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের কথা-বার্তা শুনে মনে হয়, তারা গুম-খুন করে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু পৃথিবীর কোনো দেশে এভাবে অন্যায় করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। এই সরকারও পারবে না।
সরকারের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, বড় বড় কথা ও মিথ্যাচার পরিহার করুন। এখনো সময় আছে, দেশের জনগণের আশা-আকাক্সা অনুযায়ী দাবি মেনে নিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন।
২০ দলীয় জোটকে জনগণের জোট অভিহিত করে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে সরকারি জোট ভোট পেয়েছে ৫ ভাগ। বাকি ৯৫ ভাগ জনগণ ২০ দলীয় জোটের সাথে আছে।
খালেদা জিয়ার সাথে এক টেবিলে ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সেক্রেটারি খোন্দকার লুৎফর রহমান, জামায়াতে ইসলামীর আমিনুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, খেলাফত মজলিশের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসহাক, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রমুখ।
ইফতার অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ডা. রিদওয়ান উল্লাহ শাহিদী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শেখ শওকত হোসেন নীলু, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির রেদোয়ান আহমেদ, শাহাদত হোসেন সেলিম, লেবার পার্টির মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির খন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, ন্যাপের জেবেল রহমান গাণি, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান, ইসলামিক পার্টির আবদুল মোবিন, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জমিয়তের উলামা ইসলামের মাওলনা রেজাউল করীম, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, কল্যাণ পার্টির এম এম আমিনুর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জাগপার নেতৃবৃন্দের মধ্যে খন্দকার আবিদুর রহমান, রেহানা প্রধান, মহিউদ্দিন বাবলু, এম এ হান্নান, আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, আসাদুর রহমান খান, ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, ইকবাল হোসেন, হাসমত উল্লাহ, শেখ জামান উদ্দিন, ডা. আওলাদা হোসেন শিল্পী, জাগপা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল আলম শেখ জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. পিয়াস করীম, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, জাতীয় প্রেস কাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, রাজশাহী মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, গাজীপুরের মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান, পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলা চেয়ারম্যানস শামীম সাঈদী, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী, ছোট ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ইফতারে ছিলেন।
বিএনপির নেতাদের মধ্যে ছিলেন, আসম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস,নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আবদুল্লাহ আল নোমান, খোন্দকার মাহবুব হোসেন,অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শ্যামা ওবায়েদ প্রমূখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *