কিংবদন্তির নায়করাজ রাজ্জাকের ৮০তম জন্মদিন আজ।

Slider বিনোদন ও মিডিয়া


বাংলা চলচ্চিত্রে একটি জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের নাম নায়করাজ রাজ্জাক। টালিগঞ্জে আবদুর রাজ্জাক হয়ে জন্ম যার, চলচ্চিত্রে অভিনয়গুণে ঢাকায় তিনি হয়ে গেলেন সবার প্রিয় নায়করাজ রাজ্জাক। বড় পর্দার ক্যারিয়ারে তিনশ’র বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। পরিচালনা করেছে ১৬টি চলচ্চিত্র। অভিনয় দক্ষতায় পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তির ৮০তম জন্মদিন আজ।

তিনি জন্মেছিলেন ১৯৪২ সালের এই দিনে তৎকালীন অভিভক্ত ভারতের দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জের নাকতলায়। সেসময় তার পুরো নাম ছিল আবদুর রাজ্জাক। অভিনয়ের প্রতি নেশা তাকে কোনো সীমারেখায় আটকাতে পারেনি।সহকারী পচিালক হিসেবে চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার শুরু করলেও অভিনয়ে অভিষেক হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। যদিও নিজের জন্মস্থানে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন মঞ্চে নাটকে মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন, তবে সেটা পপেশাদার অভিনেতা হিসেবে নয়। তিনি ঢাকায় এসে থিতু হলেন। কালের পরিক্রমায় ঢালিউডের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন।

১৯৬৩ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ নামের বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার অভিষেক হয়। যদিও এতে তার চরিত্রটি ছিল ছোট। কিন্তু সেটাই তাকে স্বপ্নের সিড়ি হতে সাহায্য করে। তিনি জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। পরবর্তী সময়ে অভিনয়ে তিনি এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠেন যে, নাম ওঠলেই তাঁর স্তুতিতে মুখর থাকত চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। তার অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বাংলা চলচ্চিত্র পত্রিকা চিত্রালী’র সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরী তাকে নায়করাজ রাজ্জাক উপাধি দিয়েছিলেন।

নায়করাজ রাজ্জাককে ষাটের শেষ দিক ও সত্তর দশকের প্রধান অভিনেতা হিসেবে ভাবা হতো। অভিনয় জীবনে বেহুলা ছাড়াও আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, জীবন থেকে নেয়া, ওরা ১১ জন, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল, অশিক্ষত, ছুটির ঘণ্টা, বাবা কেন চাকর এবং বড় ভালো মানুষ ছিলসহ মোট ৩০০টির বেশি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন এই কিংবদন্তি। পরিচালনা করেছেন মোট ১৬ টি চলচ্চিত্র। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রাজলক্ষী প্রোডাকশন থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।

সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। ১৯৭৬, ১৯৭৮, ১৯৮২, ১৯৮৪ ও ১৯৮৮ সালে তিনি মোট পাঁচবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৩ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়াও তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য বাচসাস পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

২০১৭ সালের ২১শে আগস্ট ৭৫ বছর বয়সে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *