শারীরিক চাহিদা মেটাতে না পারায় শরিফুলকে খুন করেন ফারজানা’

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের শরিফুল (২৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) হাসিবুল ইসলাম এ তথ্য জানান। গত ৯ জানুয়ারি শরিফুল খুন হলেও গত শনিবার তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মরদেহ উদ্ধারের তিন দিন পর আজ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনের কথা জানাল পুলিশ। আগের দিন গতকাল মামলার আসামি, শরিফুলের স্ত্রী ফারজানা আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করে বক্তব্য দিয়েছেন বলেও জানায় পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘দেড় মাস আগে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের আগনুকালি গ্রামের শরিফুল (২৫) বিয়ে করেছিলেন একই উপজেলার চর বেতকান্দি গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ফারজানা খাতুনকে (১৮)। বিয়ের পর থেকেই শরিফুলের শারীরিক অক্ষমতার কারণে অসুখী ছিলেন ফারজানা।

হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিজের স্বজনদেরকে জানিয়ে বিচ্ছেদের কথা বললে তারা ফারজানাকে গালমন্দ করতেন। তাই পরিকল্পিতভাবে শরিফুলকে হাত-পা বেঁধে হত্যার পর করতোয়ায় ফেলে দেন ফারজানা।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘গত ৯ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ১১টায় শ্বশুরবাড়িতে যান শরিফুল। ওইদিন রাত তিনটার দিকে শরিফুলকে প্রতারণার মাধ্যমে নদীর পাড়ে নিয়ে যান ফারজানা। কবিরাজের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নদীর স্রোতের পানি তুলে পান করলে শারীরিক অক্ষমতা দূর হবে। শরিফুল তাতে সায় দিলে তার পরনের লুঙ্গি ছিঁড়ে হাত ও পা বেঁধে দেন ফারজানা।’

তিনি বলেন, ‘এরপর একটি প্লাস্টিকের বোতল হাতে নিয়ে নদীর স্রোতের পানি তুলতে গেলে ফারজানা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং ঘাড় চেপে ধরেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ফারজানার হাতে কামড় বসিয়ে দেন শরিফুল। এ সময় ফারজানা ক্ষিপ্ত হয়ে শরিফুলের ঘাড় ভেঙে দেন।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘পরে শরিফুলের মৃত্যু নিশ্চিত হলে পাশে থাকা শ্যালো নৌকার নিচে মরদেহ ঢুকিয়ে দেন ফারজানা। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার চার দিন পর গত শনিবার সকাল ১০টায় পার্শ্ববর্তী শিবরামপুর গ্রামের করতোয়া নদীর পোলঘাটে মরদেহ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করার পর শরিফুলের মা ও পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করেন।’

তিনি বলেন, ‘ওইদিনই স্ত্রী ফারজানাসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা সূর্য বানু বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের নামে মামলা করেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *