বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের সম্পত্তি আদালত কর্তৃক ক্রোকের আদেশ ফরমায়েশি এবং প্রতিহিংসা পরায়ণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ১/১১-এর জরুরি সরকার দেশকে বিরাজনীতিকরণ অর্থে মাইনাস-২ -সহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাদের ভিশন সফল করতে চেয়েছিল। ওই সময় ষড়যন্ত্রমূলক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। রাজনৈতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র তারেক রহমানের স্ত্রী ও জিয়া পরিবারের সদস্য হওয়ায় ডাক্তার জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার আসামি করা হয়।
তিনি বলেন, আজ এমন এক সময়ে জোবাইদা রহমানের সম্পত্তি ক্রোকের ফরমায়েশি আদেশ দেয়া হলো, যখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে দুর্নীতিবাজ সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিপ্লব ও গণ-আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনে সরকার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে গুলি করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করেছে। বাধা, প্রতিবন্ধকতা, গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা, বিপুল দমন-পীড়ন চালিয়েও আন্দোলন নস্যাৎ করতে পারছে না। জনস্রোত ঠেকাতে পারছে না, তাই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যে মামলায় হয়রানি করে নেতাকর্মী ও জনসাধারণের মনোবল বিনষ্ট করতেই সরকারের ইঙ্গিতে এই আদেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির চলমান আন্দোলনকে নেতৃত্বশূন্য করতে প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকার মিথ্যে, বানোয়াট, কাল্পনিক অভিযোগে মামলা ও রায় দিয়ে মিথ্যাচার করছে।
মোশাররফ হোসেন বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন যেন আজ বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে- যে সকল সম্পত্তির মালিক তারেক রহমান নন, কোন দলিলে বা চুক্তিতে যেখানে তারেক রহমানের নাম, স্বাক্ষর বা সংশ্লিষ্টতা নাই, তাকে সেসব সম্পত্তির গায়েবি মালিক বানিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমনকি তারেক রহমান এবং ডা. জোবাইদা রহমানের কর পরিশোধকৃত সম্পদ নিয়েও কাল্পনিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের নির্মম প্রতিহিংসায় দেশ আজ পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। দেশে বিরাজমান সীমাহীন দুর্নীতির মহাতাণ্ডব দুদকের চোখে পড়ে না। ২০০০ সালে স্বাধীন বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হবার কলঙ্কের তিলক তৎকালীন আওয়ামী সরকার লাগিয়েছিল। বর্তমানে আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় এবং পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের অনুগত ব্যবসায়ী এবং নেতাকর্মীরা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ দুদক নেয় না। জনগণকে বিভ্রান্ত ও আন্দোলন দমন করতে নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আবারো চক্রান্ত শুরু করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। আর এই চক্রান্তের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে তা অবান্তর, ভিত্তিহীন, অমূলক। যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা প্রতিহিংসামূলক ফরমায়েশি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সরকারের হীন এই কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে এবং সরকারকে এসব হীন ষড়যন্ত্র পরিত্যাগ করে সুষ্ঠু রাজনীতির ধারায় ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব মামলা, আদেশ, রায় দিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ, বিতর্কিত বা ডা. জোবাইদা রহমানকে হেয় প্রতিপন্ন করতে পারবে না এবং গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় চলমান আন্দোলন বিভ্রান্ত বা নস্যাৎ করতে পারবে না।
অবিলম্বে দলের তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এই আদেশ ও রায় বাতিল করার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, উপদেষ্টা এ জে মোহাম্মদ আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।