গুলির সামনে বুক পেতে দেওয়া জনগণকে থামানো যায় না: গয়েশ্বর

Slider রাজনীতি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘সরকারকে বুঝতে হবে জনগণ যখন তার অধিকার আদায়ে সক্রিয় হয়, সাহসী হয় আর গুলি করার জন্য নিজের বুক পেতে দেয়; সেই জনগণকে কখনো থামিয়ে রাখা যায় না- এই শিক্ষাটা সরকারের হওয়া উচিত।’ গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশের আগে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গ টেনে আজ বুধবার সরকারের উদ্দেশে এ কথা বলেন তিনি।

‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ রাজবন্দী’র মুক্তির দাবিতে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে স্যাংশনের (নিষেধাজ্ঞা) কথা বলছেন। আর বিদেশীরা স্যাংশন আর কত দেবে। জনগণ স্যাংশন দিয়ে বসে আছে। সুতরাং জনগণের স্যাংশন মোকাবিলা করা কঠিন কাজ -এটা কখনো কেউ পারে নাই।’

তিনি বলেন, ‘সেজন্য আবার বলছি, এনাফ ইজ এনাজ। ১৫ বছরে বহু লুট করেছেন. বহু মায়ের বুক খালি করেছেন, অনেক গুম করেছেন। বাকি সময়টা নিরাপদে শান্তিতে আল্লাহতালা যে কয় দিন হায়াত দিয়েছে ততদিন বেঁচে থাকুক দোয়া করি। জনগণের অধিকার জনগনের হাতে ফিরিয়ে দেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘স্বেচ্ছায় যদি আপনি পদত্যাগ করে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেন জনগণ আপনাকে ক্ষমা করলেও করতে তো পারে। কিন্তু সর্বশেষ পর্যন্ত আপনি যদি আপনার ইগো নিয়ে থাকেন, আপনি ওমুকের কন্যা, আমি ওমুক এসব বলে থাকেন তাহলে ক্ষমা তো দূরের কথা অনেক কিছু ভাগ্যে জুটবে না।’

১০ ডিসেম্বরের ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতেই সরকার দলের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করাকে ‘অন্তসারশূন্য’ অভিহিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এসব করে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ সরকার বন্ধ করতে পারেননি। অবিলম্বে বিএনপি মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ নেতা-কর্মীদের অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান তিনি

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের ১০ দফা- আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) আমরা পতন ঘটাতে চাই। তার আগে আপনি যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ পুনরুজ্জীবিত করেন তাহলে আমাদের পতনের আন্দোলন করার দরকার নাই। আর যদি না করেন, তখন আমাদের পিঠ দেয়ালেই ঠেকা। আমাদের পেছনে হটার সময় নেই। সামনে আমরা গুলি খেতে পারি আপনার পতন রোধ করার শক্তি বাংলাদেশে নাই, বিদেশেও নাই।’

তিনি বলেন, ‘জনগণের দাবির কাছে যদি আপনি নতি স্বীকার করে পদত্যাগ করেন, গণতন্ত্রের পরিবেশ সৃষ্টি করেন অবশ্যই বিএনপি একটি সহনশীল দল, খালেদা জিয়া একজন অত্যন্ত মহানুভব, তিনি ক্ষমা জানেন, তিনি মানুষের ওপর অত্যাচার করবেন না এবং জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন ক্ষমাশীল ব্যক্তি। সুতরাং সেই দলের নেতা-কর্মীরা অবশ্যই আপনাদের নিরাপদ জীবনের জন্য ভবিষ্যতে সহযোগিতা করবে শুধুমাত্র গণতন্ত্রের বন্ধ দুয়ারে খোলার জন্য।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘রক্তপাত ঘটাবেন না, কথায় কথায় গুলি করবেন না। পুলিশকে জনগণের শত্রু বানাবেন না।’

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরীর পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, মোস্তফা কামাল মজুমদার, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক রফিকুল কবির লাবু, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, অধ্যাপক আনিসুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান চুন্নু, রাশেদুল হক, বিপ্লব-উজ জামান বিপ্লব, মির্জা লিটন, সাখাওয়াত হোসেন, এবিএম রুহুল আমিন, জহিরুল ইসলাম, মাহবুব আলম, আবু জাফর খান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *