মেসিকে পরানো বিশতের চাহিদা এখন আকাশচুম্বী

Slider খেলা


কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসির হাতে ট্রফি তুলে দেয়ার আগে গায়ে জড়িয়ে দেয়া হয় ‘বিশত’। যেটি আরবদের সংস্কৃতির অংশ। বিয়ে বা বিশেষ অনুষ্ঠানে পোশাকটি পরা হয়। সেই কালো বিশত গায়ে চাপিয়ে ট্রফি তুলে নেন মেসি। এই দৃশ্য যখন আহমেদ আল-সালিম টেলিভিশনে দেখতে পান গর্বে তার মন ভরে যায়। কারণ ওই বিশতটি তার দোকান থেকেই কেনা! এবং আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, তিনি জানতেন না এই বিশত মেসির জন্য নেয়া হচ্ছে!

কাতারের রাজধানী দোহার সোক ওয়াকিফ মার্কেটে আল-সালিমের দোকান। এটি তার পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন সেখানে আট থেকে দশটি বিশত বিক্রি হয়। কিন্তু মেসিকে রোববার রাতে (বাংলাদেশ সময়) ওই বিশত পরানোর পর তার দোকানে ক্রেতাদের লাইন লেগে গেছে। সোমবার তার দোকানে দেড় শতাধিক বিশত বিক্রি হয়েছে, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ! এর মধ্যে মেসির গায়ে জড়ানো সবচেয়ে দামী বিশতটি বিক্রি হয়েছে তিনটি! যার মূল্য দুই হাজার দুই শ’ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় দুই লাখ ২৬ হাজার ২৬৬ টাকা।

বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচটি দোকানের পাশে এক ক্যাফে বসে দেখছিলেন সালিম। এর আগে তার দোকানের সেরা দুটি বিশত তিনি বিক্রি করছেন বিশ্বকাপের কর্মকর্তাদের কাছে। তিনি জানতেন না বিশত দুটি দুই বিখ্যাত ফুটবলারের জন্য নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ছিল একটু ছোট সাইজের, যেট চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক মেসি পরেছেন। অপরটি একটু বেশি লম্বা, যেটি ফ্রান্সের অধিনায়ক হুগো লোরিস পরেছেন।

সালিম এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতাম না বিশত দুটি কাদের জন্য নেয়া হচ্ছে।’

যখন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি মেসিকে ওই বিশত পরাচ্ছিলেন তিনি দেখেন হতবাক হয়ে যান। কারণ ওই বিশতে তার দোকানের ট্যাগ লাগানো ছিল! তিনি খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান!

আল-সালিম স্টোর কাতারের রাজপরিবারের কাছে দীর্ঘদিন ধরে বিশত সরবরাহ করে আসছে। সাধারণত তারা দিনে ৮-১০টি বিশত বিক্রি করে।

কিন্তু সোমবার তারা দেড় শ’র বেশি বিশত বিক্রি করেন। এর মধ্যে তিনটি ছিল মেসি গায়ে জড়ানো সেই দামি বিশত।

সালিম বলেন, ‘একই সময় বিশতের জন্য দোকানের বাইরে লম্বা লাইনে ৪০ থেকে ৫০ জন অপেক্ষা করছিলেন। এবং তারা সবাই আর্জেন্টিরার সমর্থক।’

সালিম যখন এএফপি’কে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলো তখন এক দল আর্জেন্টাইন সমর্থক দোকানের সামনে জড়ো হয়। তাদেরই একজন মাউরিসিও গার্সিয়া। তিনি বিশত কিনতে এসেছিলেন। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় কেনেননি। তবে কাতারের আমির মেসিকে বিশত উপহার দেয়ায় খুব খুশি হয়েছেন।

বলেন, ‘আমরা যখন আমিরকে দেখলাম মেসিকে বিশত পরাচ্ছেন খুব খুশি হয়েছি। মনে হলো একজন বাদশা আরেকজন বাদশাকে বিশত উপহার দিচ্ছেন।’

তবে কেউ কেউ মেসিকে বিশত পরানোর সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, বিশত পরায় মেসির জার্সি ঢেকে গেছে।

কিন্তু সামজিক মাধ্যমে আরবরা বিষয়টির প্রশংসা করেছে। এছাড়া সালিমসহ অন্যান্যরা বলেছেন, মেসিকে সম্মান করে বিশত পরানো হয়েছে। এখানে বিষয়টি ছোট করে দেখার কিছু নেই।

সূত্র : আরব নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *