গণতন্ত্র মঞ্চের গণমিছিল ৩০ ডিসেম্বর

Slider রাজনীতি

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নামা গণতন্ত্র মঞ্চ আগামী ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে। আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমঞ্চের নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে ঢাকা মহানগরীতে ৩০ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরা সমাবেশ করব এবং সেখান থেকে গণমিছিল শুরু হবে।’

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন, সে নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে গণমিছিলের জন্য এই দিনটি বেছে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মঞ্চের নেতারা।

এ প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি ঘোষণা করছি, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ওই কালো দিনের প্রতি ঘৃণা নিক্ষেপ করে দেশব্যাপী যে নির্যাতন ও ধরপাকড় লিস্টের মধ্যে অনেকে আছে। আমরা বেগম জিয়ার মুক্তির কথা বলছি, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির যে দুজন নেতা মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ আমাদের গণতন্ত্রের অনেক নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি ও সরকারের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার দাবিতে সেদিন গণমিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’

সংবাদ সম্মেলন ডাকার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষে থেকে একটা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিলে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ থেকে। যে কোনোভাবেই হোক না কেন এটার সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের একটা তারিখের সংঘাত হয়েছে। উনারা (বিএনপি) আমাদের কাছে জিজ্ঞাস করেছিলেন। যেহেতু আন্দোলন গড়ে তুলবার ব্যাপারে আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ বিএনপির সঙ্গে মতবিনময় আদান-প্রদান করছি, আলোচনা করছি। উনারা আমাদের জানিয়েছিলেন এই পরিস্থিতিতে কি করা যেতে পারে?’

‘আমরা সবাই এ ব্যাপারে একমত হয়েছিলাম- তুমি অধম তাই বলে আমি উত্তম হব না এমন তো কথা নেই। অতএব আমরা তাই পেছাব এবং সেই অনুযায়ী আমরা প্রস্তাব করেছিলাম ৩০ ডিসেম্বর আরেকটা কালো দিন, দিন-রাত মিলে দিনটি গণতন্ত্রের জন্য একটা কলঙ্ক। এদিন আমরা পালন করি এবং তার সঙ্গে যে চলমান দাবি-দাওয়া সেগুলো যুক্ত করি। এ ব্যাপারে বিএনপির সঙ্গে আমাদের ঐক্যমত হয়েছে এবং আমরা এটা ঘোষণা করতে এই সংবাদ সম্মেলন করছি,’ বলেন মান্না।

তিনি আরও বলেন, ‘এই কর্মসূচি আমরা ছাড়াও আরও অনেক দল ঘোষণা করবে। একই সঙ্গে একই রকম দাবিতে সেদিনটি তারা পালন করবেন। এটার মধ্যে এক ধরনের যুগবদ্ধতা আছেই তো। তার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বলতে চাই, আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ কেবলমাত্র এক দফার আন্দোলন করছি না। আমাদের আন্দোলনের শীর্ষ বিন্দু হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগের দাবি সেখানে একটা অন্তবর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা করা, দেশের নির্বাচনের উপযুক্ত মাঠ তৈরি করা এবং একই সঙ্গে একই গুরুত্বের সঙ্গে আমরা বলছি যে, সামগ্রিক এই শাসন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা পরিবর্তনও আমরা চাই। আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বা যুগপত আন্দোলনের ভিত্তি তাই।’

গত ১২ ডিসেম্বর গণতন্ত্র মঞ্চ সরকার পতনে ১৪ দফা দাবি উপস্থাপন করে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে থাকার ঘোষণা দেয়। এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ থেকে ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে আগামী ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপি।

গণমঞ্চের ১৪ দফার মধ্যে সংসদ বিলুপ্ত করে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় নির্বাচনের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন, নুতুন নির্বাচন কমিশন তৈরি, খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তির পাশাপাশি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠাসহ দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ দফা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, আকবর খান গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, হাবিবুর রহমান রিজু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ইমরান ইমন, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, কামাল উদ্দিন পাটোয়ারি, গণঅধিকার পরিষদের মো. রাশেদ খান, নাগরিক ঐক্যে শহীদুল্লাহ কায়সার নেতৃ্বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *