নীলফামারীর সৈয়দপুরে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টির (জাপা) উপজেলা কার্যালয়ে একই বাঁশে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উড়ানোয় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে শহরের শেরে বাংলা সড়কের থানা-সংলগ্ন উপজেলা জাতীয় পার্টির অফিসে এভাবে পতাকা উত্তোলন করা হয়।
জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর সকালে জাতীয় পার্টির অফিসে একটি বাঁশের খুঁটির উপরের দিকে জাতীয় পতাকা ও তার কিছুটা নিচে দলীয় পতাকা লাগানো হয়েছে। সামান্য সময়ের ব্যবধানে বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ বিষয়ে পোস্ট করে। ফলে সর্বত্র ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার বলেন, এর মাধ্যমে মূলত জাতীয় পতাকারই অবমাননা হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দল এমন কাজ কিভাবে করতে পারে? এটাকে ভুল বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, জাতীয় পতাকা উত্তোলনে এতটা অসতর্কতা মেনে নেয়ার নয়। বিশেষ করে একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এটা কখনই শোভনীয় হতে পারে না। এর মাধ্যমে মূলত জাতীয় পতাকারই অবমাননা করা হয়েছে।
উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন বলেন, সকালে আমাদের নেতাকর্মীরা পতাকা উত্তোলন করেন। আমরা বিষয়টি খেয়াল করিনি। আগামীতে ভালোভাবে পতাকা উত্তোলন করব। এটা ভুলবশত হয়ে থাকতে পারে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল হক বলেন, এই ঘটনায় জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়েছে। ভুল হয়েছে বলে অপরাধের মাত্রা আরো বৃদ্ধি করা হচ্ছে। শহিদদের রক্তে রঞ্জিত লাল সবুজের পতাকা ও দেশের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থাকলে একটি রাজনৈতিক সংগঠন ভুলেও এমনটি করতে পারে না।
এ সময় তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। একইসাথে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাকিব খান বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। পার্টি অফিসের দায়িত্বশীলদের বিষয়টা খেয়াল করা উচিত ছিল। অসতর্ক ব্যক্তিদের এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়াও ঠিক না। তিনি এ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রায়হান ফয়সাল বলেন, ‘আমি বিষয়টি মাত্রই জানতে পারলাম। এখন একটা মিটিংয়ে আছি। কাজ শেষে খবর নেব। অবমাননা করা হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আদেলুর রহমান আদেলের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।