প্রতি বিশ্বকাপেই ফেবারিটের তালিকায় আর্জেন্টিনা। ঠিক একেবারেই বিপরীত অবস্থানে পোলান্ড। তাদের কেউই সম্ভাব্য শিরোপা প্রত্যাশী ভাবে না। এমনটা চিন্তা করার মতো পারফরম্যান্সও নেই পোলিশদের। যদিও দলটি ১৯৭৪ ও ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া দল। এরপর ১৯৮৬ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার পর আর নক আউটেই উঠতে পারেনি। পরবর্তীতে লম্বা সময় এই গ্রেট আসরের বাইরে। ২০০২ বিশ্বকাপে ফিরে এরপর ২০০৬ ও ২০১৮ হয়ে এবার কাতার বিশ্বকাপে। এই তিন টুর্নামেন্টেই তাদের ছিটকে পড়া গ্রুপ পর্ব থেকে। এবার দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট ভাণ্ডারে থাকায় রবার্ত লেভানদভস্কির নেতৃত্বে থাকা দলের ভালো সুযোগ গ্রুপ পর্ব টপকানোর। এজন্য বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ১টায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ড্র ই যথেষ্ঠ। হারলেও চান্স থাকবে। তবে এজন্য অন্য ম্যাচের রেজাল্ট এবং গোল পার্থক্য হবে বিবেচ্য। পোল্যান্ডের লক্ষ্য এখন একটাই ড্র। তাই অতিরক্ষনাত্মক খেলবে তারা। জানান তাদের কোচ চেজতাও মিচনেউইজ।
পোল্যান্ডের জন্য এই দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগটা ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপে খেলার ছাড়পত্র পাওয়ার মতোই। সেবার তাদের বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে ড্র দরকার ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সে খেলায় পুরোপুরি ডিফেন্সিভ স্টাইলে খেলা শুরু করলেও এক পর্যায়ে এগিয়ে যায়। এরপর নিজেদের ঘর সামলিয়ে খেলতে থাকা। শেষ পর্যন্ত তারা জিততে পারেনি। ইংল্যান্ড গোল শোধ দেয়ায় ১-১ হয় স্কোর। এরপরও সমস্যা হয়নি। কারণ ওই ড্রই তাদের প্রয়োজন ছিল। সে ম্যাচই এখন মেসিদের বিপক্ষে বড় অনুপ্রেরণা ইউরোপের দলটির। কোচ সেভাবেই উদ্বুদ্ধ করছেন ফুটবলারদের।
পোল্যান্ড আজকের এই ম্যাচে তাকিয়ে আছে গোলরক্ষক ওসসিজ জেসনের দিকে। সৌদি আরবের বিপক্ষে তিনিই ছিলেন ম্যাচের সেরা। শুধু পেনাল্টিই ঠেকাননি, সাথে আরব দেশটির অন্য সব গোল প্রচেষ্টাতেও বাধা তিনি। পোল্যান্ডের কোচের আশাবাদ আজও আর্জেন্টিনাকে রুখে দিতে পোস্টের নিচে দুর্বার থাকবেন ২০১৭ সাল থেকে ইতালির ক্লাব জুভেন্টাসে খেলা এই কিপার।
সৌদি আরবের বিপক্ষে জয়ের পর দলের সাথে হোটেলে ফিরেননি পোলিশ কোচ। অন্য কোচিং স্টাফদের নিয়ে দেখতে বসে যান আর্জেন্টিনা- মেক্সিকো ম্যাচ। ফলে টিম হোটেলের বরাদ্ধকৃত খাবার জোটেনি মিচনেউইজের। তার সব কিছুই অন্তঃত মেসিদের কাছ থেকে এক পয়েন্ট আদায় করা।
তার মতে‘যতো বাজে খেলাই হোক, দেখতে যতো বিশ্রীই হোক না কেন আমরা খেলবো পুরোপুরি রক্ষনাত্মক স্টাইলে। মানুষ কিন্তু দিন শেষে রেজাল্টই মনে রাখবে। যোগ করেন,‘সৌদি আরবের বিপক্ষে আমরা সেভাবে ভালো খেলতে পারিনি। এরপরও ম্যাচেতো জিতেছি। মানুষতো এই ফলাফলেই সন্তুষ্ট। তবে মেক্সিকো এবং সৌদি আরবের চেয়ে আর্জেন্টিনা যে অনেক শক্তিশালী তা স্বীকারও করলেন তিনি।
আর্জেন্টিনা এবং পোলান্ডের আগে ১১ বার মুখোমুখি হয়েছিল। তাতে জয়ের পাল্লা বেশি ল্যাতিন আমেরিকান দেশটির। ছয় বার জয় আর্জেন্টিনার। তিন বার জিতেছে পোলিশরা। বাকি দু‘বার ড্র। তবে সর্বশেষ সাক্ষাতে শেষ হাসি পোল্যান্ডেরই। ২০১১ সালের ফিফা প্রীতি ম্যাচে পোল্যান্ড ২-১ গোলে হারায় প্রতিপক্ষকে। বিশ্বকাপে এ দু‘দলের দেখা দুইবার। ১৯৭৪ সালের জামার্নিতে অনুষ্ঠিত আসরে পোল্যান্ডের জয় ৩-২ গোলে। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা নিজ মাঠে তাদের ২-০ তে হারিয়ে বদলা নেয়।