পেরু থেকে ৬৬তম সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী পেলেন প্রফেসর ইউনূস

Slider বাংলার সুখবর


বোগোটা, ১৩ নভেম্বর ২০২২: পেরুর সিজার ভাল্লেও বিশ্ববিদ্যালয় (Cesar Vallejo University) তার সর্বোচ্চ সম্মাননা — সম্মানসূচক পিএইচডি ডিগ্রী প্রদান করলো নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে। কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় ১৩ নভেম্বর ২০২২ অ্যাম্বেসী স্যুইটস হিলটনে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মাননা দেয়া হয়।
পেরুর ট্রুহিলো প্রদেশে অবস্থিত সিজার ভাল্লেও বিশ্ববিদ্যালয় পেরুর বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। তিরিশ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি ক্যাম্পাস এবং ১২টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২৬টি কর্মসূচি রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, প্রফেসর ইউনূসকে তিন বছর পূর্বে এই ডিগ্রী প্রদান করা হলেও করোনা মহামারীর কারণে সে সময় তিনি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। এবার প্রফেসর ইউনূসের কলম্বিয়ায় অবস্থানকালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বোগোটায় এসে তাঁকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রী প্রদানের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে।

২০১৬ সালের নির্বাচনে পেরুর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ও বিশিষ্ট সমাজসেবক সিজার আকুনিয়া ১৯৯১ সালে সিজার ভাল্লেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন স্বয়ং তিনি নিজে এই বিশেষ ডিগ্রী প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. জিনেট ট্যানটেলেন রডরিগেজ ও মহাব্যবস্থাপক ড. কারিনা কারদেনাজ রুইজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে বোগোটায় আসেন।
ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে, বিশেষ করে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে দরিদ্রতম ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য প্রফেসর ইউনূসকে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার এই সর্বোচ্চ সম্মাননা প্রদান করলো।
আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে ডিগ্রী প্রদানের পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রফেসর ইউনূসকে ডিগ্রীপ্রদান অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক পরিচ্ছদ পরানো হয়। পেরু ও বাংলাদেশ উভয় দেশের পুরো জাতীয় সংগীত বাজানোর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. জিনেট রডরিগেজ বিশ্ববিদ্যালটির ইতিহাস ও পটভূমি বর্ণনা করেন এবং কেন প্রফেসর ইউনূসকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রী প্রদান করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা করেন। সম্মাননার আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে প্রফেসর ইউনূসকে একটি সার্টিফিকেট ও মেডেল এবং পেরুর বিশিষ্ট কবি সিজার ভাল্লেও যাঁর নামানুসারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছে তাঁর সম্পূর্ণ সাহিত্যকর্ম প্রদান করেন। অনুষ্ঠানের শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মি. সিজার আকুনিয়া বলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় কমিউনিটির একজন হিসেবে প্রফেসর ইউনূসকে পেয়ে তাঁরা অত্যন্ত গর্বিত। তিনি আরো ঘোষণা করেন যে, অচিরেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
সিজার ভাল্লেও বিশ্ববিদ্যালয় মূলত দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা দিয়ে থাকে এবং এর প্রতিষ্ঠাতার দর্শনই হচ্ছে কেউ যেন অর্থাভাবে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়। প্রফেসর ইউনূসের পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়টি আরো ১১ জন নোবেল লরিয়েটকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করেছে যাঁদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল জয়ী এডওয়ার্ড মোজার ও সাহিত্যে নোবেল জয়ী মারিও ভারগাস ইয়োসা।
এই সম্মানসূচক ডক্টরেটটি সহ প্রফেসর ইউনূস এ পর্যন্ত ২৭টি দেশ থেকে ৬৬টি ডক্টরেট ডিগ্রী পেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *