আমিরাতকে বড় ব্যবধানে উড়িয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সারল আর্জেন্টিনা

Slider খেলা


মোহাম্মদ বিন জায়েদ স্টেডিয়ামে বুধবার (১৬ নভেম্বর) স্বাগতিকদের বিপক্ষে লিওনেল স্ক্যালোনির শিষ্যদের জয় ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে। দলের হয়ে জোড়া গোল করেছেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। একটি করে গোল করেন লিওনেল মেসি, হুলিয়ান আলভারেজ ও হোয়াকিন কোরেয়া।

ফিফা বিশ্বকাপের মঞ্চে আর্জেন্টিনা শেষবার শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার উঁচিয়ে ধরেছিল ১৯৮৬ সালে। সেই শেষ, ম্যারাডোনার পর গত তিন যুগে আর কেউ হাসি ফোঁটাতে পারেননি আলবিসেলেস্তেদের মুখে। ২০১৪ সালে লিওনেল মেসির নেতৃত্বে স্বপ্নের খুব কাছে গিয়েও মারিও গোটজে নামক দুঃস্বপ্নে হৃদয় পুড়ে সমর্থকদের। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে আরও হতাশাজনক পারফরম্যান্স ছিল আর্জেন্টিনার। তবে টানা ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকা, ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা ও ইতালিকে হারিয়ে ফিনালিসিমা জেতা দলটাকে নিয়ে আরও একবার স্বপ্ন দেখছে আলবিসেলেস্তেরা।

আমেরিকা ও ইউরোপ চষে বেড়ানো আর্জেন্টিনা কাতারে বিশ্বকাপের যুদ্ধে পা রাখার আগে নিজেদের একবার যাচাই করে নিল মধ্যেপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে। যেখানে উড়ন্ত একে আর্জেন্টিনাকেই দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। স্বাগতিকদের যেন কোনো পাত্তাই দেয়নি তারা। ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশে ১৫টি শট নিয়ে ৫টিতেই সফল তারা।

যদিও প্রথমার্ধের শুরুতে গোল পেতে একটু সময় লেগেছিল স্ক্যালোনির শিষ্যদের। ম্যাচের ১৭ মিনিটে ডেডলক ভেঙে দলকে প্রথম গোল উপহার দেন হুলিয়ান আলভারেজ। বাঁ-প্রান্তে আক্রমণে উঠে ডি-বক্সের দিকে ছুটে চলা আলভারেজের উদ্দেশে বল বাড়িয়ে দেন মেসি। আমিরাতের ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান আলভারেজ।

আরবদের রক্ষণদুর্গ ভাঙার পর দ্বিতীয় গোলটিও আসে মাত্র ৮ মিনিটের মধ্যে। ডানপ্রান্ত থেকে মার্কোস আকুনইয়ার ক্রস ডি-বক্সে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দৃষ্টিনন্দন শটে জালে জড়ান অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। দুই গোল হজমের পর ছন্দ হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। চোখে চোখ রেখে লড়াইটাও যেন ভুলে বসে তারা।

মেসি-ডি মারিয়াদের একের পর এক আক্রমণ সামলানোতেই বেশির ভাগ সময় কাটায় তারা। ৩৬ মিনিটে ডি-বক্সে আলেক্সিস মাক আলিস্তার পাস দখলে নিয়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোলরক্ষকের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে লক্ষ্যভেদ করেন ডি মারিয়া।

বিরতির আগমুহূর্তে জালের দেখা পান মেসিও। ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডি মারিয়ার পাস নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কোনাকুনি শটে আমিরাতের গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।

বিরতির পর একাধিক ফুটবলারকে পরিবর্তন করেন স্ক্যালোনি। এ ম্যাচ কাতার বিশ্বকাপের আগে শিষ্যদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেয়ার। তাই খুব বেশি ঝুঁকি নিতে রাজি নন আর্জেন্টাইন কোচ। ডি মারিয়া, নিকোলাস ওটামেন্দি, মাক আলিস্তার ও মার্কোস আকুনইয়াকে তুলে মাঠে নামানো হয় নাহুয়েল মলিনা, জার্মেইন পেৎসেয়া, হোয়াকিন কোরেয়া ও গঞ্জালো মন্তিয়েলকে। ৫ মিনিট পর আলভারেজকে তুলে এনজো ফার্নান্দেজকে নামান স্ক্যালোনি।

বদলি নেমে দলকে পঞ্চম গোল উপহার দেন হোয়াকিন কোরেয়া। তাকে অ্যাসিস্ট করেন রদ্রিগো ডি পল। ৬৯ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে আরব আমিরাত। পোস্টের কাছে বল পেয়েও গোলের উদ্দেশে পা বাড়ানোর চেষ্টা করেননি স্বাগতিক দলের ফরোয়ার্ডরা। ৮১ মিনিটে পোস্টের কাছে দুইবার চেষ্টা করেও বল জালে জড়াতে পারেননি আমিরাতের ফরোয়ার্ডরা। প্রথম প্রচেষ্টায় ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে লাউতারো মার্টিনেজকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন আলি সালেহ।

ফিরতি বল নিজে আর শট নেয়ার চেষ্টা না করে বাড়িয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত সাইয়োকে। কিন্তু তার শটও ফিরিয়ে দেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডাররা। শেষদিকে আর্জেন্টিনা কিছুটা বিবর্ণ পারফরম্যান্স উপহার দেন। অন্যদিকে একাধিক সুযোগ পেয়েও ঘরের মাঠের সমর্থকদের একটি গোলও উপহার দিতে পারেননি আমিরাতের ফুটবলাররা। শেষ পর্যন্ত ৫-০ গোলের বড় জয় নিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শেষ করে আর্জেন্টিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *