মুন্সিগঞ্জে আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ১০

Slider রাজনীতি

মুন্সিগঞ্জ সদরের আধারা ইউনিয়নের বকুলতলা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আধারা ইউনিয়নের বকুলতলা এলাকায় কয়েক দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ককটেল বিস্ফোরণ ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল আনুমানিক ১১টা’র দিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বকুলতলা এলাকার আলী হোসেন সমর্থক আশাব গাজির ছেলে অটোচালক কামরুল (২২) কে মারধর করে সুরুজ মেম্বার ও আহাদুল সমর্থকরা। এর জের ধরে দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে সুরুজ মেম্বার ও আহাদুল সমর্থকদের সাথে বকুলতলা এলাকায় আলী হোসেন সমর্থকদের কথা কাটাকাটি হয়। সুরুজ মেম্বার ও আহাদুল সমর্থকরা সোলারচর থেকে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সোলারচর আলী হোসেন সরকারের বাড়িতে হামলা করে। এরপর তারা বেলা ৩টার দিকে বকুলতলা এলাকায় গিয়ে আলী হোসেন সমর্থকদের উপরও হামলা চালায়। এ সময় আধারা গ্রাম থেকে আব্দুল হক মোল্লার সমর্থকরা সুরুজ মেম্বার ও আহাদুলের পক্ষ হয়ে বকুলতলা এলাকায় জড়ো হয়ে আলী হোসেন সরকারের সমর্থকদের উপর হামলা করে। পরে সুরুজ মেম্বার, আহাদুল ও আব্দুল হক মোল্লার সমর্থকদের সাথে আলী হোসেন সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ হয়। ২ পক্ষের বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন।

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. রুহুল আমিন জানান, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মনির হোসেন মোল্লাকে হাসপাতালে আনা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গুলিবিদ্ধ মনির হোসেন মোল্লা (৬৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান বলে তার পরিবার জানায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আধারা ইউনিয়নের বকুলতলা এলাকার মোতালেব মোল্লার ছেলে।

নিহত মনির হোসেন মোল্লার মেয়ে সানিয়া বলেন, বকুলতলা, আধারা ও সোলারচর এলাকার মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় আমার বাবা নামাজ পরে বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

এই ঘটনায় আহতরা হলেন, সোলারচর এলাকার শাকিল সিকদার এর ছেলে আলভী (১৪), মিজানের ছেলে রিমন (১৪), আবুল খায়েরের ছেলে মো. টিটু (২৭), আবু শেখের ছেলে আসাদ বেপারী (২৯), আরমান গাজীর ছেলে আশিক (২১), রহমানের ছেলে হৃদয় (১৮), হিরা সরকারের ছেলে শরীফ (২২), নাসির উদ্দিন ছেলে রিয়াজ (২৫), নুর মোহাম্মদ এর ছেলে রাসেল (২৪), তেতুলিয়া এলাকার জসীমউদ্দিন এর ছেলে মাহিম (১৮), চর আব্দুল্লাহ্ এলাকার জমসেদ নাসের (৪৫), সোলারচর এলাকার রহমানের ছেলে হাসান (২৫), ফরিদ হোসেন এর ছেলে আসলাম (২৫), বকুলতলা এলাকার মোতালেব মোল্লার ছেলে মনির হোসেন মোল্লা (৬৫), জাজিরা এলাকার নুরু বেপারীর ছেলে ফাহাদুল (২০), চর আব্দুল্লাহ্ এলাকার মৃত ছিটু নায়েবের ছেলে আলী নায়েব (৬৫), সোলারচর এলাকার আফসার উদ্দিন শেখ এর ছেলে জান্নাত (২৬)।

এর মধ্যে ১০ জন গুলিবিদ্ধকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং একজনকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটে পাঠানো হয়। গুলিতে তার একটি চোখ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. রুহুল আমিন জানিয়েছেন।

মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার জানান মাহফুজুর রহমান আল-মামুন জানান, সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ পেয়েছি। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *