দিক দিগন্তে সরকার পতনের ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হচ্ছে : রিজভী

Slider রাজনীতি


দিক দিগন্তে সরকার পতনের ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, প্রায় দেড় দশক ধরে দুঃশাসনকবলিত বাংলাদেশের মানুষ এবার হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। আমাদের সভা সমাবেশগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন, যেভাবে তৃণমূলের উত্থান হয়েছে তাতে অবৈধ সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।

রিজভী বলেন, জনসভাগুলোতে মানুষ আসছে বানের মতো। কণ্ঠে তাদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়ার আত্মপ্রত্যয়ের আওয়াজ। লুটপাট-খুন-গুম নির্যাতনে ডুবে থাকা সরকারের নেতারা ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে নির্ঘুম হয়ে গেছেন। সরকার পতনের ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হচ্ছে দিক দিগন্তে।

বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, বিপুল জনসমাগম দেখে তারা উন্মাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এ কারণে জনতার দুর্বার আন্দোলনের কথা শুনে হিংস্র হয়ে উঠেছেন তারা।

বেগম খালেদা জিয়া ইতিহাসের চরমতম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার দাবি করে দলটির এই মুখপাত্র বলেন, কয়েকদিন ধরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আবারো নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস। তাদের এই হুঙ্কারে আবারো জনগণের সামনে প্রমাণিত হলো দেশের মানুষের প্রাণের স্পন্দন সবচেয়ে জননন্দিত বেগম খালেদা জিয়া ইতিহাসের চরমতম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারারুদ্ধ।

তিনি বলেন, আইন আদালত যে তাদের ইশারায় চলে সেই সত্যটা নিজেদের মুখেই স্বীকার করেছেন হাছান মাহমুদ ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস। এতেই বুঝা যায় বিচারক এবং আদালত সর্বোপরি প্রশাসন আওয়ামী লীগের তল্পিবাহকের ভূমিকা পালন করে।

রিজভী বলেন, আমরা আগেও বলেছি, আইন আদালতে আওয়ামী চেতনার পরীক্ষিত ব্যক্তিদের বসিয়ে অভিনয় করানো হয়। কিন্তু আসল রায় আসে গণভবন থেকে। প্রাণ বাঁচাতে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এই কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন।

দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে হাছান মাহমুদ ও শেখ ফজলে নুর তাপসের হুঙ্কারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, এই মুহূর্তে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন ভীরু ও কাপুরুষের দল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রটেকশনে গুণ্ডা ও সন্ত্রাসীরা বাহাদুরী দেখায়। প্রকৃত সাহসী ও বীরদের কখনোই ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার নজির নেই সারা দুনিয়াতে। যারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশকে ধ্বংস করতে দ্বিধা করে না, তারাই রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও দলীয় গুণ্ডাপাণ্ডাকে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে লেলিয়ে দেয়।

রিজভী আরো বলেন, এত অত্যাচার-আক্রমণ-চক্রান্ত-সন্ত্রাস-খুন-বিশ্বাসঘাতকতা ও কুৎসা সত্ত্বেও জনগণের আন্দোলন থেমে থাকবে না। পথে বাধা ও নেতাকর্মীদের ওপর শারীরিক আক্রমণ সত্ত্বেও আজ চট্টগ্রামের পোলো গ্রাউন্ডের মহাসমাবেশে জনতার ঢল নামবে। সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলেও জনগণকে কাবু করা যায় না। আজকে চট্টগ্রামে সমাবেশের সফলতা সেটিরই প্রমাণ হবে।

চট্টগ্রামের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গতরাত থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এ ধরনের কাপুরুষোচিত ও বর্বরোচিত হামলা, নেতাকর্মীদের গুরুতর আহত করাসহ চট্টগ্রাম মহানগরে নেতাকর্মীদের বাসায় এবং হোটেলগুলোতে পুলিশের তল্লাশি ও পথে পথে বাধা দেয়ার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।

এ সময় তিনি গাজীপুরে পুলিশের দায়ের করা মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিবউন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *