‘ছাত্রলীগ না করলে হলে থাকা যাবে না’ বলে সাংবাদিককে মারধর

Slider বাংলার মুখোমুখি

ছাত্রলীগ কর্মীর জন্মদিন পালন না করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) কর্মরত এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সংগঠনটির কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় তাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দিয়েছেন কর্মীরা। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলের ২১২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী রেদওয়ান আহমদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। পাশাপাশি তিনি দেশের জাতীয় দুটি দৈনিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

অন্যদিকে, মারধরকারীরা হলেন- লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরশিল আজিম নিলয় এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শোয়েব আতিক। তারা দুজনই শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক গ্রুপ বিজয়ের কর্মী।

ভুক্তভোগী রেদওয়ান আহমদ বলেন, ‘রাতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নাহিদুল ইসলামের জন্মদিনের পার্টি ছিল। আমি সেখানে না যাওয়ায় আরশিল আজিম নিলয় আমার রুমে আসে। আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা আমাকে বলে-ছাত্রলীগ না করলে হলে থাকা যাবে না। এরপর আরশিল আজিম নিলয় তার সঙ্গে থাকা শোয়েব আতিককে মারধর করার নির্দেশ দেয়।’

‘শোয়েব আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করলে আমি সঙ্গে সঙ্গে বিজয় গ্রুপের নেতা আল আমিন ভাইকে কল দিয়ে বিষয়টি জানাই। তিনি তাদের নিষেধ করার পরও আমাকে আরও দুই দফায় মারধর করা হয়। এ সময় ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নাট্যকলা বিভাগের আবু বকর সিদ্দিকসহ ছাত্রলীগের আরও ১০-১২ জন উপস্থিত ছিল’ বলেন রেদওয়ান।

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগেও ছাত্রলীগ কর্মীরা আমাকে কয়েকবার বলেছে তাদের মিছিল-মিটিংয়ে যেতে হবে। হলে থাকতে হলে ছাত্রলীগ করতে হবে। কিন্তু আমি তো হলে রাজনৈতিকভাবে উঠিনি। তাদের মিছিল-মিটিংয়ে কেন যাব? আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। ন্যায়বিচার চাই।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শোয়েব আতিক ও আরশিল আজিমকে নিলয়কে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে বিজয় গ্রুপের নেতা আল আমিন বলেন, ‘আমরা বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলা আমরা কখনোই সমর্থন করি না।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন আগেও সাংবাদিকদের সঙ্গে বিজয় গ্রুপের অনুসারীরা ঝামেলা করেছিল। আমরা অভিযোগ দেওয়ার পরও প্রশাসন শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এবার যদি অভিযুক্তদের বহিষ্কার না করে, তাহলে আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *