আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ, গোলাবর্ষণ

Slider সারাবিশ্ব


শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি, মর্টারশেল বিস্ফোরণের পর শনিবার সকালেও কয়েকটি গোলার বিকট শব্দ হয়েছে। আর শূন্যরেখায় মর্টারশেলের বিস্ফোরণে আহতরা এখনো উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় চলাচলে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে। এতে আতঙ্কে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।

ইরাবতির প্রতিবেদনে জানা গেছে, শুক্রবার রাখাইন রাজ্যের তনগুপ টাউশিপে সংঘর্ষ হয়। শোয়ে লিন ইয়োনে বন্দরে খাবার নিয়ে যাওয়ার সময় জান্তা বাহিনীর উপর হামলা চালায় আরাকান আর্মি। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য জান্তা সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত বছর তনগুপ বন্দরটি গড়ে তোলে।

মংডু টাউনশিপ ও পালেটওয়ায় গত আগস্ট মাস থেকেই আরাকান আর্মির সংঘর্ষ শুরু হয়েছে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে। জানা গেছে, আরাকান আর্মি ইতোমধ্যেই পালেটওয়ায় জান্তা বাহিনীর পাঁচটি ও মংডুর দুইটি চৌকি দখল করে নিয়েছে। পেয়েছে অনেক অস্ত্রশস্ত্রও।

সামরিক জাহাজ, ট্রাক এবং হেলিকপ্টারে রাখাইন রাজ্যে বিপুল সংখ্যক সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র আনা হচ্ছে। এজন্য বেসরকারি ফেরি এবং বাসও ব্যবহার করা হচ্ছে। আরাকান আর্মি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে। আরাকান আর্মি বলেছে, তারা নিরাপত্তা চেক করবেন। বাস ও ফেরি চালকদের টাইমটেবল জানাতে বলেছেন তারা। ব্যত্যয় হলে দায় তাদেরকে বহন করতে হবে।

এছাড়া মিয়ানমারের চিন রাজ্যের পালেটওয়া টাউনশিপে বৃহস্পতিবার থেকে সেনাচৌকির দখল নিয়ে আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। ভোর রাতে কালাদান নদীর পূর্বে তেমাওয়া গ্রামের পাহাড় চূড়ার উপর হামলা চালিয়েছে আরাকান আর্মি।

বাসিন্দারা বলেছেন, জান্তা বাহিনী তিনমা গ্রামের মিওয়া পাহাড়ের দিকে ক্রমাগত গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার পালেটওয়ার একজন বাসিন্দা বলেছেন, ‘সকাল থেকেই কান ফাটানো গোলাবর্ষণ শুরু হয়। আমরা শুনেছি, আরাকান আর্মি সেনাচৌকিটি দখল করে নিয়েছে।’

জান্তা বাহিনী গোলাবর্ষণের জন্য বৃহস্পতিবার জঙ্গি বিমান ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছে। তেমাওয়া চৌকি থেকে পালেতোয়া-কাইউকতাও ইট বসানো রাস্তাটির উপর নজরদারি করা যায়। ২০১৮ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তারিংকে স্থানটি পরিত্যক্ত করা হয়েছিল।

অন্যদিকে, মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি), যারা কারেন স্টেটের মায়াওয়াদ্দি টাউনশিপে যুদ্ধরত ছিলেন, তারা আদেশ অমান্য করেছে এবং প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতির পর যুদ্ধ করতে অস্বীকার করে। কিন্তু মিয়ানমারের সামরিক ব্যক্তিদের মতে তারা কারেন প্রতিরোধ বাহিনীতে চলে গেছে।

গত সপ্তাহে কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নে (কেএইইউ) যোগ দেওয়া সেনা সদস্য ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটিলিয়নের জাউ হটাট বলেছেন, ‘কাইয়ো ওয়াহ পো হিলের এলআইবি ১০২-এর সদস্যরা কৌশলগত কমান্ডারের কাছে সমর্পণ করেছে। তারা বলেছে, তারা ফিরে যাবে। কৌশলগত কমান্ডার তাদের থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।’

এলআইবি ১০২-এর সৈন্যরা, যারা সাধারণত মোন স্টেটের মোটামা টাউনে থাকে, তারা মায়াওয়াদ্দি টাউনশিপের দক্ষিণে মায়াওয়াদ্দি-ওয়া লে রোড বরাবর কেএনইউ এর সশস্ত্র উইং এবং মিত্র প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত সামরিক শাসক বাহিনীগুলোর একটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *