চলন্ত বাসে ডাকাতি-গণধর্ষণ: আরও দুইজনের স্বীকারোক্তি

Slider জাতীয়


টাঙ্গাইলের আলোচিত চলন্ত বাসে ডাকাতির পর বাসের এক নারী যাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আরও দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নওরিন করিম তাদের জবানবন্দি নেন।

আসামিরা হলেন- ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী রতন হোসেন এবং আব্দুল মান্নান। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর তানভীর আহমেদ জানান, রতন হোসেন, আব্দুল মান্নান, খন্দকার মো. হাসমত আলী ওরফে দীপু এবং মো. জীবন ডিবি হেফাজতে ৩ দিনের রিমান্ডে ছিলেন। রিমান্ড শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার তাদেরকে আদালতে তোলা হয়। এর মধ্যে রতন ও মান্নান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। রিমান্ড শেষ হওয়া অপর দুইজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে বুধবার (১০ আগস্ট) বাবু হোসেন (২১) এবং সোহাগ মন্ডল (২০) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

উল্লেখ্য, গত ২ আগস্ট রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ২৪-২৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। গভীর রাতে সিরাজগঞ্জ পৌঁছালে সেখান থেকে কয়েকজন ডাকাত যাত্রীবেশে ওই বাসে উঠে পড়ে। এরপর বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর ডাকাতদল সেটি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরে বাসে থাকা যাত্রীদের হাত, পা ও চোখ বেঁধে মারধর ও টাকা-পয়সা লুটপাট করে। এ সময় বাসের ভেতরেই এক নারীকে ডাকাতদল ধর্ষণ করে এবং রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বাসটি বালুর ডিবিতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় পরদিন ৩ আগস্ট মধুপুর থানায় ডাকাতি ও দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে বাসটির যাত্রী হেকমত আলী বাদী হয়ে মামলা করেন।

এই মামলায় প্রথমে গত বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাজা মিয়া নামে একজনকে টাঙ্গাইল পৌরসভার দেওলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এরপর তাকে আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে শুক্রবার (৫ আগস্ট) অভিযান চালিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে নুরনবি ও আওয়াল নামের আরও দুই ডাকাত সদস্যকে আটক করা হয়। পরে তাদের শনিবার (৬ আগস্ট) আদালতে হাজির করা হলে তারা ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন।

এ ঘটনায় রোববার রাতে র‌্যাব ঢাকা ও কালিয়াকৈর থেকে আরও ১০ জনকে গ্রেফতার করে। পরে সোমবার রাতে র‌্যাব ডিবি পুলিশের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করেন। পরে ডিবি পুলিশ তাদের আদালতে পাঠালে চারজনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ ও ছয়জনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ মামলায় আজ ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী রতন হোসেন এবং আব্দুল মান্নান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *