নির্বাচিত হয়েই তোপের মুখে বিক্রমাসিংহে

Slider সারাবিশ্ব


শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট এবং ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা রনিল বিক্রমাসিংহেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছেন দেশটির সংসদ সদস্যরা। তবে তার এ জয় মেনে নিতে পারেননি দুর্নীতিমুক্ত সরকার গঠনের দাবিতে মাসের পর মাস আন্দোলন করে আসা বিক্ষোভকারীরা। ফলে বিক্রমাসিংহের জয়ের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কায় নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে বলে শঙ্কা অনেকের।

বুধবারের (২০ জুলাই) প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে মোট ২১৯ ভোটের মধ্যে বিক্রমাসিংহে ১৩৪ ভোট পেয়েছেন এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুল্লাস আলাহাপ্পেরুমা পেয়েছেন ৮২ ভোট। আর বামপন্থী নেতা অনুরা দেশনায়েক শুধু নিজের দল থেকে ৩ ভোট পেয়েছেন।

তবে ফল ঘোষণার পরপরই নতুন করে আন্দোলন শুরুর কথা জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এক নেতা ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তারা এখন তাদের ভবিষ্যত কৌশল (বিক্ষোভের) নিয়ে আলোচনা করছেন।

মেলানি গুনাথিলাকে নামে ওই নেতা বলেন, ‘আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে আলোচনা করছি এবং পুনর্গঠিত হচ্ছি। রনিল বিক্রমাসিংহে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা অবশ্যই আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাব। আমরা কোনোভাবেই এটি (বিক্রমাসিংহের জয়) চাইনি।’

মেলানি আরও বলেন, ‘আমরা খুব ভালো করেই জানি যে রনিল বিক্রমাসিংহে গোতাবায়া রাজাপাকসের মতো নন। তিনি আরও ধূর্ত। সম্প্রতি তিনি জরুরি অবস্থা জারি করে এবং বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার পাঠিয়ে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমি মনে করি না যে মানুষ আর এসবে ভয় পাবে।’

তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা এমন একজন যোগ্য নেতা চায় যে আসলে তার জনগণের জন্য চিন্তা করে, নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নয়।’

এদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে ‘এগিয়ে যাওয়ার পথে যাত্রা’ শুরু করার জন্য ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন বিক্রমাসিংহে।

ছয়বারের এ প্রধানমন্ত্রী দেশের চলমান সংকট মোকাবিলায় অন্যান্য প্রার্থীর পাশাপাশি বিরোধী দলকেও একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে দেশের অবস্থা কতটা কঠিন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। এখন আমি সবাইকে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য আলোচনা করতে একত্র হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার ভাগ্য অনেকটাই নির্ধারণ হয়ে গেল।

গুরুত্বপূর্ণ এ পদটিতে কে আসীন হবেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। উদ্বিগ্ন ছিল সাধারণ মানুষও। তবে তাদের সেই উদ্বেগ সহসাই কমছে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে এতদিন এগিয়ে ছিলেন দেশটির প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। তবে তার সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় হাঠাৎ পাল্টে যায় সব সমীকরণ।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। দেশের কল্যাণের স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি। তার সরে যাওয়ার পর বিক্রমাসিংহের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে ‍যায়। এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *