ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের চাপে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঢাকার আব্দুল্লাপুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত এ সড়কে যানজটের পরিমাণ কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ ও যাত্রীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে দুপুরের দিকে গাজীপুরের বেশিরভাগ পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ার পর শ্রমিকরা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে মহাসড়কে এবং বিভিন্ন বাস স্টেশনে অবস্থান নিতে থাকেন।
ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে যাচ্ছিলেন রেজাউল করিম। তিনি একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। দুপুর ১টার দিকে কারখানা ছুটি হলে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তায় আসেন। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা অবস্থান করে তিনি কোনো বাসের সন্ধান পাননি।
রেজাউল করিম জানান, বাসে সিট ফাঁকা না থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অনেকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছুটে চলছেন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশে ১২ কিমি যানজট
নেত্রকোনাগামী বাসের চালক আবুল হোসেন জানান, গত দুদিন ধরে মহাসড়কে যাত্রী সংখ্যা খুবই কম ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে হঠাৎ করে সড়কে যাত্রী সংখ্যা বেড়ে যায়। তবে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
পোশাকশ্রমিক হানিফ সরকার জানান, শুক্রবার দুপুরের পর তাদের কারখানা ছুটি হবে। যানজটের দুর্ভোগ এড়াতে দুদিন আগেই স্ত্রী ও সন্তানকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে টঙ্গী থেকে গাজীপুর চান্দরা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় বিভিন্ন স্থানে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও সড়কের দুই পাশে দুই লেনের সরু অংশ দিয়ে বিপুলসংখ্যক যানবাহন চলাচলের কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছেন এ সড়কে চলাচলকারী পরিবহন শ্রমিক ও চালকরা।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশে ১২ কিমি যানজট
টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে চেরাগআলি পর্যন্ত সড়কের মাঝখানে ফ্লাইওভারের পিলার নির্মাণাধীন থাকায় দুই পাশের সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই অংশে যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। ফলে ওই অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
গাজীপুর সড়ক পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমদ সরকার জানান, ঈদ উপলক্ষে কারখানা ছুটি হওয়ার পর শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে বাসস্ট্যান্ডের দিকে আসতে থাকেন। সড়কে ধারণক্ষমতার বেশি যানবাহন চলাচল করায় বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মহাসড়কে যানজট এড়াতে টঙ্গী থেকে চন্দনা চৌরাস্তা, কোনাবাড়ি, জয়দেবপুরে পুলিশ তৎপর রয়েছে। বিশেষ করে পশুবাহী গাড়িগুলোকে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পুলিশ বিশেষ নজর দিচ্ছে। মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখতে পুলিশ সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।