নারী হয়রানি বন্ধে রাজধানীর পাবলিক বাসে বসছে সিসিটিভি ক্যামেরা। নির্দিষ্ট একটি জায়গা থেকে সেই ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করা হবে। সেটি ছাড়াও ক্যামেরার সঙ্গে থাকা হেল্পলাইন নম্বর ১০৯-এ ফোন করেও অভিযোগ জানাতে পারবেন ভুক্তভোগী নারী।
কর্মস্থলে যেতে রাজধানীর গণপরিবহনে ভোগান্তি নিত্যসঙ্গী। নারীদের ক্ষেত্রে গণপরিবহনে এর মাত্রা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। নানাভাবে নানা মাত্রায় বাসে পুরুষ যাত্রী তো বটেই, অনেক সময় চালকের সহকারীর মাধ্যমেও হয়রানির শিকার হন নারীরা।
কিন্তু কখনোই কোনো প্রমাণ থাকে না ভুক্তভোগীর হাতে। প্রমাণ রাখতে এবার বাসের ভেতর সিসি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শুরুতে ১০০ বাসে সিসি ক্যামেরা বসবে। পরবর্তী সময়ে এর পরিধি আরও বাড়বে। বেসরকারি একটি সংস্থা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজটি করবে।
শুধু নারী যাত্রীরাই নন, এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরাও। তাদের মতে, গণপরিবহনে নারীদের বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি একটা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া পাবলিক বাসে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য মাত্র ৯টি আসন বরাদ্দ থাকায় বাধ্য হয়ে অপরিচিতদের সঙ্গে আসন ভাগাগাগি করে বসতে হয়। এতে হয়রানির শঙ্কা আরও বেড়ে যায়।
এখন থেকে অভিযোগকারী গণপরিবহনে বসেই নারী হেল্প লাইন ১০৯ নম্বরে ফোন করতে পারবেন। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল বলছেন, ঈদের পরই শুরু হবে ক্যামেরা বসানোর কাজ। তার মতে, এতে শুধু নারী হয়রানি নয়, গণপরিবহনে কমবে নানা অপরাধও। তিনি বলেন, ‘বাস প্রতি একটি ক্যামেরা দিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করা হবে। পরে যদি মনে হয় একাধিক ক্যামেরা প্রয়োজন তখন পুরো বাসেই ক্যামেরা বসানো হবে। এতে পকেটমার থেকে শুরু যেকোনো অপরাধও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’
শুধু ক্যামেরা বসালেই হবে না, এর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা জরুরি, এমন মত গণপরিবহন বিশেষজ্ঞদের। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক সাইফুন নেওয়াজ বলেন, ‘বাসগুলো রাতের বেলা বা বিশ্রামের সময় রাস্তার পাশে পার্ক করা থাকে। তখন যে কেউ এই ক্যামেরা খুলে নিয়ে যেতে পারে। এতে কাজের কাজ কিছুই হবে না।’ তার মতে, নিয়মিত মনিটরিং না করলে এই উদ্যোগ কোনো কাজে আসবে না। কিছুদিন পরই মুখ থুবড়ে পড়বে।
উন্নত বিশ্বের বহু দেশে তো বটেই ভারতের অধিকাংশ গণপরিবহনে আছে সিসি টিভি ক্যামেরা।