বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ভাইবোন, ৩৬ ঘণ্টা পর ভাসল মরদেহ

Slider জাতীয়


বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ডুবে নিখোঁজের ৩৬ ঘণ্টা পর দুই ভাইবোনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ভারতীয় পুলিশ।

রোববার (৩ জুলাই) দুপুর একটার দিকে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর কাশিয়াবাড়ী সীমান্তের জিরো লাইনের দিগলা কুরা নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় নদীর দু’ধারে বিজিবি-বিএসএফের টহল জোরদার ছিল।

মৃত ওই দুই ভাইবোন হলো পারভিন খাতুন (৮) ও শাকিবুল হাছান। তাদের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার পশ্চিম শুকাতী গ্রামে। তাদের বাবা রহিম উদ্দিন ও মা ছামিনা বেগম।

দিগলাকুড়া নদী পাড়ের অধিবাসী ইসাহাক আলীর স্ত্রী রাবেয়া খাতুন জানান, রোববার সকালে নিখোঁজ ভাইবোনের মরদেহ পাশাপাশি ভাসতে দেখে বিজিবি বিওপিতে খবর দেন। সেই সঙ্গে এলাকাবাসীকে খবর দেন তারা। খবর শুনে সবাই আসলেও কোনো কিছু করা সম্ভব হচ্ছিল না। কেননা ভেসে উঠার স্থানটি ভারতের ভূ-খন্ডের অভ্যন্তরে। এ অবস্থায় বিজিবি সদস্যরা বিষয়টি বিএসএফকে অবহিত করে।

এরপর এ নিয়ে বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে সংক্ষিপ্ত পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিজিবি এবং বিএসএফ সদস্যদের উপস্থিতিতে এক ঘণ্টা ধরে চেষ্টা চালানোর পর ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানা পুলিশ ভাইবোনের মরদেহ উদ্ধার করে তাদের থানায় নিয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে ওই সীমান্ত এলাকার দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাটের ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কাশিপুর কোম্পানী সদর দফতরের কমান্ডার কবির হোসেন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, নদীতে দুই শিশুর মরদেহ ভাসার খবর জানার পর তা বিএসএফকে অবগত করা হয়।

এরই প্রেক্ষিতে বিজিবি এবং বিএসএফের কোম্পানী কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বিজিবি পক্ষে কমান্ডার কবির হোসেন এবং বিএসএফের পক্ষে ছেউটি-১ ক্যাম্পের ইন্সপেক্টর এস এইচ শংকর কুমার নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিশু দু’জনের মরদেহ এক সপ্তাহ থাকবে। এরপর তাদের বাংলাদেশি হিসেবে কাগজপত্র পাওয়া গেলে বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় নিবেন তারা।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার পশ্চিম শুকাতি গ্রামের রহিম উদ্দিন বিগত ২০০৪ সালের দিকে ভারতের দিল্লীতে ইটভাটায় কাজ করতে যান। এরপর ২০০৫ সালের দিকে ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার নয়ারহাট এলাকার সাজেদুল হকের কন্যা সামিনা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয়। তখন থেকে রহিম উদ্দিন সেখানে বসবাস করে আসছেন। তাদের দুটি সন্তান হয়।

পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দেশে ফিরছিলেন রহিম উদ্দিন। ফেরার সময় মায়ের হাত ধরে নদী পার হচ্ছিল দুই শিশু। এ সময় হঠাৎ বিএসএফের ধাওয়ায় মায়ের হাত থেকে ছুটে নদীর স্রোতে নিখোঁজ হয় শিশু দুটি। তবে তাদের বাবা-মা নিরাপদে নদী পার হয়ে দেশে ফিরেছেন বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *