আজ ঢাবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, গবেষণা-উদ্ভাবনে জোর

Slider শিক্ষা


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও পথচলা শুরু হয়েছে পূর্ব বাংলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষে সুনির্দিষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। তিনটি ভিন্ন ভিন্ন শাসনের মধ্য দিয়ে জাতির আলোকবর্তিকা হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।

রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা-সংস্কৃতিতে ব্যাপক অবদান রাখার মধ্য দিয়ে ইতোমধ্যে শতবর্ষ পার করেছে।
৩টি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক, ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী এবং ৩টি আবাসিক হল নিয়ে ১৯২১ সালের ১ জুলাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা শুরু হয়েছিল। শতবর্ষ পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর অনেক বেড়েছে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ৮৩টি বিভাগ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল এবং প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে সমসাময়িক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে মানদণ্ডে নিজের অবস্থান সুসংহত করতে পারেনি মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবারই র‌্যাংকিং ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আলোচনা থাকে সর্বাগ্রে। যে কারণে শতবর্ষপূর্তির উৎসব থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সামনের সারিতে অবস্থান করার যে পূর্বশর্ত রয়েছে তা পূরণ করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে ১০১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনেও গবেষণা-উদ্ভাবনে ব্যাপক জোর দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, প্রিয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোভিড-১৯ মহামারিসহ বৈশ্বিক নানামুখী অভিঘাত মোকাবিলা করে আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণের পথে এগিয়ে চলেছি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রাখা আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। যুগ ও সমাজের চাহিদা অনুযায়ী গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, নতুন নতুন উদ্ভাবন, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, মুক্তচিন্তার উন্মেষ ও বিকাশ, সৃজনশীলতার চর্চা এবং নতুন ও মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। কারিকুলাম ও পাঠক্রমের আধুনিকায়ন এবং মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণার প্রতি আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। গবেষণার সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘গবেষণা-প্রকাশনা মেলা’ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের যোগসূত্র স্থাপিত হবে বলে আশা করছি। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং বিশ্বমানের গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে আমি শিক্ষক, গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সদয় সহযোগিতা ও সমর্থন প্রত্যাশা করি। প্রকৃতি ও পরিবেশের উন্নয়ন ঘটিয়ে অবারিত জ্ঞান চর্চা এবং নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে- এ আমার বিশ্বাস। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলা ভবন ও ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রেসহ সকল একাডেমিক ভবন, আবাসিক হলে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন: ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা’। এ উপলক্ষে শুক্রবার (১ জুলাই) দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সকাল ১০টায় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১০টার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রা সহকারে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে সমবেত হবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, কেক কাটা এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে থিম সং পরিবেশিত হবে।

সকাল ১১টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন: ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আলোচনা সভায় অংশ নেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *