রংপুর অঞ্চলে ফের বন্যার আশঙ্কা

Slider রংপুর

উজানের পাহাড়ি ঢলে রংপুর বিভাগে দ্বিতীয় দফায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যার ক্ষত না শুকাতেই আবার বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ফলে বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের বাসিন্দারা। ভয়াবহ বন্যার শঙ্কায় জরুরি প্রস্তুতি সভা করেছে রংপুর বিভাগীয় প্রশাসন।

বুধবার (২৯ জুন) সকাল থেকে উজানের পাহাড়ি ঢলে বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, ঘাঘট, দুধকুমারসহ রংপুর বিভাগের প্রায় সব ছোট-বড় নদীর পানি। উজানে ভারী বৃষ্টি অব্যহত থাকলে যেকোনো সময় বড় ধরনের বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ১২টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদী গাইবান্ধা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১১ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি রংপুর নগরীর ইসলামপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭৮ সেন্টিমিটার ও করতোয়া নদী গাইবান্ধার চক রহিমপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৯৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, তালুক শিমুলবাড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। দুধকুমার নদীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, উজানে ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পানি আরও বাড়তে পারে। রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার বন্যায় নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরে নদী অববাহিকায় বা চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্কতামূলক বার্তা পাঠানোসহ স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে দ্বিতীয় দফায় বন্যার শঙ্কায় রংপুর বিভাগে জরুরি সভা করেছে বিভাগীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। বুধবার সকালে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরে বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে এ সভায় রংপুর বিভাগের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের বন্যা মোকাবিলায় তাদের প্রস্তুতির কথা জানান।

দ্বিতীয় দফা বন্যা মোকাবিলায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় ত্রাণ তৎপরতা, উদ্ধার কার্যক্রম, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, বন্যা দুর্গতদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা, অসুস্থ্যদের চিকিৎসা দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, বিজিবির কর্মকর্তা কর্নেল জাকারিয়া হোসেন, ৬৬ পদাতিক ডিভিশন সদর দপ্তরের মেজর মোনাব্বির মামুন, পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ নিয়াজ মোহাম্মদ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাহার উদ্দিন মৃধা, রংপুর বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. হারুন অর রশিদ প্রমুখ।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম, রংপুর মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাসিস সেন্টারের আইন কর্মকর্তা শাহীনা বেগম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের উপপরিচালক মাহবুবর রহমান, রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আবু জাকিরুল ইসলাম ও রংপুর জেলা রোভারের সম্পাদক মহাদেব কুমারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *