জার্মানি থেকে যন্ত্রপাতি আমদানির নামে ঋণের ৩২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি তহামিলুর রহমানসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২১ জুন) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এদিন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
এর আগে সোমবার (২০ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে মামলাটির অনুমোদন দেয়া হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- মেসার্স ওয়ান স্পিনিং মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুণ অর রশীদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, পরিচালক জি আর চৌধুরী ওরফে গোলাম রব্বানী চৌধুরী, নাসির উদ্দিন মিয়া, এ এইচ এম জাহাঙ্গীর ওরফে আবু হাসান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও রাজিব সিরাজ
সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক এমডি মুহাম্মদ তাহমিলুর রহমান, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আমানুল্লাহ, অবসরপ্রাপ্ত সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান ও শফিকুর রহমান, উপ-সহব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম, সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক খন্দকার মোশারফ আলী. মো. কামরুল ইসলাম ও আবু জাফর মো. সালেহ, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আলী আরশাদ ও মো. আবু মুসা, সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আতিকুর রহমান, ওয়াহিদ উদ্দিন আহম্মদ ও এস এম এম আওলাদ হোসেন এবং সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আব্দুর রাজ্জাক।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ৪ নভেম্বর মেসার্স ওয়ান স্পিনিং মিলস লিমিটেডের মালিকপক্ষ এবং সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে জামানত ছাড়াই ঋণপত্ৰ খুলে, ঋণপত্রের শর্ত না মেনে ‘এলটিআর’ সৃষ্টি করে ৩২ কেটি ৬৭ লাখ ৯৪ হাজার ৬১২ টাকার মেশিনারিজ আমদানি করেন। পরে ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করে তারা তা আত্মসাৎ করেন। টাকা আত্মসাতের জন্য দায়ী সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকজন বর্তমানে অবসরে রয়েছেন। অনেক আসামি আবার বিদেশে পলাতক রয়েছেন।
তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার গিয়াস উদ্দিন আল মামুন জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৭ সালের ৩১ জানুয়ারি গ্রেফতার হন। তখন থেকেই তিনি কারাগারে আছেন। ঘুষ হিসেবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে এক মামলায় আদালতের রায়ে সাত বছর কারাদণ্ড হয়েছে মামুনের। ওই মামলায় খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে জজ আদালত খালাস দিলেও আপিলের রায়ে হাইকোর্ট তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকার অর্থদণ্ড দেন। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অর্থপাচার, কর ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে মামুনের বিরুদ্ধে।