বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে যে অপ্রত্যাশিত বন্যা হয়েছে তাতে সহমর্মিতা জানিয়েছে ভারত। একই সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও উত্তরণে সহযোগিতা করতে চায় দেশটি।
রোববার (১৯ জুন) নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ পরামর্শক কমিশনের বৈঠক শুরু হওয়ার আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে এ সহায়তার প্রস্তাব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, বন্যা ও ত্রাণ তৎপরতা ব্যবস্থাপনায় আমরা আপনাদের সাহায্য করতে পারলে খুব খুশি হব। এটা হবে আমাদের সম্পর্কের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে চলা।
জয়শঙ্কর বলেন, আমাদের দীর্ঘ সীমান্তের উন্নত ব্যবস্থাপনাও একটি প্রধান অগ্রাধিকার। আমাদের সীমান্ত বাহিনী আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সীমান্ত যাতে অপরাধমুক্ত থাকে তা নিশ্চিত করতে আমাদের একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
আমরা উভয়ই আমাদের দেশের সমৃদ্ধে অঙ্গীকারবদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিবিআইএনে আমরা মোটরযান চুক্তিতে একসঙ্গে কাজ করছি। বিশেষ করে জলবিদ্যুৎ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও একইভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আজকের জয়েন্ট কমিশন মিটিংয়ে আমাদের সামনে যে এজেন্ডা রয়েছে, তা কেবল আমাদের অংশীদারিত্বের পরিধিকেই আন্ডারলাইন করে না, নতুন সুযোগগুলোও তুলে ধরে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সম্পর্ক আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটায়। আমরা সত্যিই একটি সোনালি অধ্যায়ে আছি। বাংলাদেশ আমাদের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার। এটি এ অঞ্চলে আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার; এটি বিদেশে আমাদের সবচেয়ে বড় ভিসার ক্ষেত্র।
বৈঠক শেষে উভয় দেশের যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড -১৯ মহামারির চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও উভয় দেশ নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে পারস্পরিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ প্রতিটি সেক্টরে আগের চেয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে।
বৈঠকে আঞ্চলিক বহুমাত্রিক সংযোগ, জ্বালানি, উন্নয়নমূলক ও সক্ষমতা বৃদ্ধির বিনিময়, সাংস্কৃতিক এবং জনগণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরিতে বিস্তর আলোচনা হয়।
দুই মন্ত্রী অভিন্ন নদী ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, তথ্যপ্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, টেকসই বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও গভীর ও জোরদার করতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হন।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সব ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পৃক্ততাকে আরও গভীর ও শক্তিশালী করার জন্য ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন উভয় মন্ত্রী।
উভয় পক্ষই রাখাইন রাজ্য থেকে মিয়ানমারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে।