যুদ্ধের মধ্যেও জ্বালানি রফতানি আয়ে রাশিয়ার রেকর্ড

Slider অর্থ ও বাণিজ্য


ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি রফতানি করে ৯৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে রাশিয়া। নতুন এক গবেষণা অনুসারে, এ সময়ের মধ্যে রাশিয়া থেকে জীবাশ্ম জ্বালানির শীর্ষ আমদানিকারক ছিল ইউরোপের দেশগুলো।

সোমবার (১৩ জুন) ফিনল্যান্ডভিত্তিক সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। রাশিয়ান বাহিনী যখন পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চল পুরোপুরি দখল করার পথে রয়েছে ঠিক তখনই এ প্রতিবেদন প্রকাশ হলো। খবর আল-জাজিরার।

রাশিয়াকে ঠেকাতে কিয়েভকে অস্ত্র ও নগদ অর্থ পাঠানোর পাশাপাশি মস্কোর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কিন্তু তা সত্ত্বেও রফতানি আয়ে রেকর্ড গড়েছে রাশিয়া, বিশেষ করে জ্বালানি খাত থেকে।

সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম ১০০ দিনে রাশিয়ার জীবাশ্ম জ্বালানির ৬১ শতাংশ আমদানি করেছে ইইউ, যার মূল্য প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া সামগ্রিকভাবে শীর্ষ আমদানিকারকদের মধ্যে ১৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি করেছে চীন, জার্মানি ১২ দশমিক ২ বিলিয়ন, ইতালি ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন, নেদারল্যান্ডস ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন, তুরস্ক ৭ বিলিয়ন, পোল্যান্ড ৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ফ্রান্স ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন এবং ভারত আমদানি করেছে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের জীবাশ্ম জ্বালানি।

গেল মে মাসে রাশিয়ার রফতানি কমে গেলেও বিশ্বজুড়ে জীবাশ্ম জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেমলিনের লাভ বাড়তে থাকে। এর ফলে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায় দেশটির জ্বালানি রফতানি আয়।

সিআরইএ বলছে, রাশিয়ার গড় জ্বালানি রফতানি আয় গত বছরের তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে।

এছাড়া গত এক বছরে ডলারের বিপরীতে ৩০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হয়েছে রুশ মুদ্রা রুবল। অথচ ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে স্মরণকালের সবচেয়ে কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ তাদের মিত্র রাষ্ট্ররা।

করোনাপরবর্তী অর্থনৈতিক সংকটে সারা বিশ্বই যেখানে মুদ্রাস্ফীতি ও মন্দায় আক্রান্ত, সেখানে একটি পুরোদস্তুর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পশ্চিমাদের কঠোর অবরোধ মোকাবিলা করে রুবলের এ অগ্রযাত্রা বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।

পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক অবরোধের জবাবে গত মার্চের শেষ দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি রুবলে তেল ও গ্যাসের মূল্য পরিশোধের শর্ত জারি করেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিকাংশ দেশই তাদের প্রয়োজনীয় তেল ও গ্যাসসহ অন্যান্য জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। এত দিন তারা এ মূল্য পরিশোধ করত ডলার-ইউরোতে। কিন্তু পুতিনের ঘোষণার পর তাদের তা পরিশোধ করতে হয় রুবলে।

মস্কোর এ জ্বালানি কেনার শর্তে ফের শক্তিশালী হতে শুরু করে রুবল। তেল ও গ্যাসের মূল্যবাবদ রাশিয়ার ব্যাংকগুলো থেকে প্রতিদিনই বিপুল অংকের রুবল কিনতে হচ্ছে পশ্চিমা জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *