টাঙ্গাইলে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৩

Slider নারী ও শিশু


টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের বাসাইলে এক শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে তিনজন কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

রোববার (৫ জুন) বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন।
তিশা আক্তার (৯) টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের মো. আবু ভুঁইয়ার মেয়ে।

গ্রেফতাররা হলো- ভাটপাড়া গ্রামের স্বপন মণ্ডলের ছেলে গোবিন্দ মণ্ডল (১৯), আনন্দ মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মণ্ডল (১৭) ও লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকার (১৬)।

পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন জানান, তিশার নাচ দেখে প্রতিবেশী গোবিন্দ, চঞ্চল ও বিজয় তার প্রতি আকৃষ্ট হয়। বিকৃত যৌন লালসা মনে পোষণ করে তারা তিশাকে বিভিন্ন সময় নানা কায়দায় উত্ত্যক্ত করত। দুই মাস আগে তিশা তার মা সম্পা বেগমের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। কিন্তু আসামিরা বখাটে ও প্রভাবশালী হওয়ায় সম্পা তাদের তেমন কিছু বলেননি। তারা তিশার মায়ের গতিবিধি অনুসরণ করতে থাকে। আসামিরা জানতে পারে তিশাকে বাড়িতে একা রেখে তার মা ছেলে শুভকে স্কুল ছুটির পর আনতে যায়।

পুলিশ সুপার জানান, গত ২৬ মে সকালে শুভকে তার মা পার্শ্ববর্তী শহীদ ক্যাডেট একাডেমিতে নিয়ে গেলে আসামিরা তিশার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তার মায়ের ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। তার মা বাড়িতে এসে তিশাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তিশাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

পুলিশ সুপার আরও জানান, তাকে বহনকৃত অ্যাম্বুলেন্স গাজীপুর পর্যন্ত গিয়ে নষ্ট হলে তাকে সাভার এনাম মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ মে তিশার মৃত্যু হয়। ওই দিনই বাসাইল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলায় মরদেহটি ময়নাতদন্ত করা হয়। ৪ জুন ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলে ওই দিনই তিশার বাবা আবু ভূঁইয়া বাদী হয়ে বাসাইল থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআই স্ব উদ্যোগে তদন্তের ভার গ্রহণ করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার আশরাফুল কবির তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের গ্রেফতার করে।

পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন বলেন, আসামিরা নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবে বলে জানিয়েছে। জবানবন্দি না দিলে মামলা তদন্তের স্বার্থে আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

তিশার মা সম্পা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে যারা অমানবিকভাবে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দাবি করছি। যাতে পরবর্তীতে আর কোনো মায়ের কোল এভাবে খালি না হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *