‘পদ্মা সেতু’ নামকরণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। রোববার (২৯ মে) রাতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেতু বিভাগের অধীন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নাধীন ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প’ এর আওতায় মুন্সিগঞ্জ জেলার মাওয়া এবং শরীয়তপুর জেলার জাজিরা প্রান্ত সংযোগকারী পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত সেতু ‘পদ্মা সেতু’ নামে নামকরণ করেছে সরকার।
জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে গত ২৪ মে বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেই সঙ্গে পদ্মা নদীর নামে এ সেতুর নামকরণ হবে বলেও জানান তিনি। অবশেষে রোববার রাতে ‘পদ্মা সেতু’ নামকরণের বিষয়ে সরকার গেজেট প্রকাশ করল।
ওইদিন ওবায়দুল কাদের জানান, ২৫ জুন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন।
এদিকে, পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে পদ্মা সেতুর সড়ক পথ। মূল সেতুর পর দুই প্রান্তের ভায়াডাক্টের কার্পেটিংও শেষ হয়েছে। এখন চলছে রেলিং ও রেলিংপোস্ট এবং দুই পাড়ে অস্থায়ী সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ।
জাজিরা প্রান্তের সাউথ ভায়াডাক্টে সোমবার (২৩ মে) বিকেলে কার্পেটিং সম্পন্ন হওয়ার মধ্যদিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সড়ক পথ পেয়েছে পূর্ণাঙ্গতা। মূল সেতুর পর এখন সংযোগ সেতুর কার্পেটিংও শেষ।
পুরো সেতুজুড়েই এখন ব্ল্যাকটপ। আর রাতে আলো ছড়াতে দুই পাশের প্যারাপেটের নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে ল্যাম্পপোস্ট। চলছে বিমানে আসা প্রথম ও দ্বিতীয় চালানের রেলিং ও রেলিংপোস্ট স্থাপন।
অন্যদিকে সমুদ্র পথে আসা রেলিংয়ের বড় চালানটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। সেতুতে রোড মার্কিং চলছে পুরোদমে। দুই পাড়ে নামফলক ও ম্যুরালের কাজ শেষের দিকে।
মূল পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি ছাড়িয়েছে ৯৮ শতাংশ। সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৯৩ শতাংশের বেশি।
পদ্মা সেতু দেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে।
আরও পড়ুন: যত ষড়যন্ত্র ছিল স্বপ্নের পদ্মা সেতু ঘিরে
দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে। ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় এ সেতু।
পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।
খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ হচ্ছে স্বপ্নের এ সেতু। ২০১৪ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।