কমতে শুরু করেছে গমের দাম

Slider অর্থ ও বাণিজ্য


ক্রেতা সংকটের কারণে হিলি স্থলবন্দরের আড়তগুলোতে বিক্রির অপেক্ষায় শত শত টন গম। এতে বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা। ফলে কমতে শুরু করেছে গমের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে গমের দাম কমেছে টনপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা।
কমতে শুরু করেছে গমের দাম
শফিকুল ইসলাম শফিক

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে মূলত গম, ভুট্টা, পেঁয়াজ ও পাথর আমদানি হয়ে থাকে। চাহিদা থাকায় বেশির ভাগ আমদানি হয় গম ও ভুট্টা। আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও ১২ মে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন এলসির কোনো গম রফতানি করবে না ভারত সরকার। এমন সংবাদের ভিত্তিতে অস্থির হয়ে ওঠে গমের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে ২৭ টাকা কেজির গম বেড়ে দাঁড়ায় ৪০-৪২ টাকা। এতে বিপাকে পড়েন পাইকারা। কমে যায় বেচাবিক্রি।

তবে সপ্তাহ যেতে না যেতেই গমের দাম নিম্নমুখী। ক্রেতা সংকটে প্রতি কেজি গমের দাম কমেছে ৫-৭ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে গম বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৭ টাকা কেজি দরে।

গম আমদানি ও গমের বাজার নিয়ে জানতে চাইলে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর রশীদ হারুন বলেন, ভারত সরকার ১২ তারিখের পর নতুন কোনো এলসির গম রফতানি করবে না–এমন খবরে গমের বাজার বেশ অস্থির হয়ে ওঠে। কারণ, কিছু ব্যবসায়ী ভেবেছিল, ভারত হয়তো গম রফতানি একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে। যার কারণে অনেক ব্যবসায়ী চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত গম কিনে মজুত করার চেষ্টা করে। আবার অনেকে দাম বাড়িয়ে দেয়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ টাকা কেজির গম বেড়ে দাঁড়ায় ৪২-৪৫ টাকা।

ভারত সরকার আগের এলসির গম যখন দেওয়া শুরু করে, তখন বাজার আবার নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি কেজি গমের দাম কমেছে টনপ্রতি ৬-৭ হাজার টাকারও বেশি।

কথা হয় আমদানিকারক রেন্টু কুমার শর্মার সঙ্গে। জানতে চাইলে বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান সারা বছর হিলি স্থলবন্দরসহ অন্য স্থলবন্দরগুলো দিয়ে পণ্য আমদানি করে। মূলত আমরা গম, ভুট্টা, ভুসি, খৈলসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য আমদানি করে থাকি। তবে দেশের বাজারে চাহিদা থাকায় গমের আমদানি বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১২ মে থেকে গম আমদানি নিয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।’

রেন্টু বলেন, ‘আমাদের ভারতে প্রচুর পরিমাণ গমের এলসি করা আছে। তবে এলসি করা থাকলেও সম্প্রতি ভারত সরকার গম রফতানি বন্ধ করার ঘোষণায় ভারতের ব্যবসায়ীরা গমের এলসি ডলার বাড়িয়ে দেয়। তাই দেশের বাজারে গমের দাম বেশি হয়। তবে বর্তমানে গমের ক্রেতা সংকটের কারণে বাজারে দাম কম। বর্তমানে গম বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৬ টাকা কেজি দরে।’

একজন পাইকার বলেন, ‘বর্তমানে গমের যে অবস্থা, আমরা গম কিনতে এসে বিপাকে পড়েছি। কখনো দাম বেশি আবার কখনো কম। গত সপ্তাহে যে গম বিক্রি হয়েছে ৪০-৪২ টাকা, আজ সে গম বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৬ টাকা দরে। প্রতি কেজিতে দাম কমেছে ৫-৭ টাকা। আর টনপ্রতি কমেছে ৫-৭ হাজার টাকা পর্যন্ত।

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা এস এম নুরুল আলম খান বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গম আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। গম একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, তাই আমরা দ্রুত ছাড় করে থাকি। হিলি বন্দর দিয়ে গত সপ্তাহে ১০৪ ট্রাকে ৪০০ টন গম আমদানি হয়েছে। তবে এ সপ্তাহে দুদিনে কোনো গম আমদানি হয়নি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *