ফের সংলাপের আহ্বান ২০ দলের

Slider রাজনীতি

69175_20

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে সরকারকে ফের সংলাপের আয়োজন করার আহ্বান জানিয়েছেন ২০ দলের মুখপাত্র ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলু।  বলেছেন, জনগণের দাবি মানতে সরকার নেতিবাচক ভূমিকায় কঠোর অবস্থানে থাকলে ২০ দলীয় জোট জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে পিছপা হবে না। জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি কেউ কখনও বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি ভবিষ্যতেও কেউ পারবে না। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।  বিবৃতিতে বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, ২৬শে মার্চ পালিত হলো মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। স্বাধীনতার চার দশক পর গোটা জাতি একটি কর্তৃত্ববাদী, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও খুনি সরকারের সীমাহীন অত্যাচার-নিপীড়ন ও নিষ্ঠুর জুলুম-নির্যাতনের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত অবস্থায় পালন করলো এই মহান দিবসটি। দেশের মানুষের প্রাণ স্বৈরতন্ত্রের পদতলে ওষ্ঠাগত। এই অবস্থায় দেশের মানুষ মুক্তির প্রতীক্ষায় ২০ দলীয় জোটের ডাকে সর্বাত্মক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন,  স্বাধীনতার মাসে দেশের প্রতিটি মানুষের মনে প্রশ্ন-স্বাধীনতা দিবসের জাতীয় অনুষ্ঠানমালায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা অনুপস্থিত কেন ? কেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের হাজার হাজার সন্তান আজ স্বৈরশাসকের লেলিয়ে দেয়া বিশেষ বাহিনী কর্তৃক মিথ্যা মামলায় আটক ও কারান্তরীণ বা ঘাতকের ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে আত্মগোপনে? যে দেশে বিচারের মানদ- নির্ধারিত হয় স্বৈরশাসকদের ইশারায়, যেদেশে নিরীহ জনগণকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়, যেদেশে জনগণের সম্পদ লুটেরাদের দখলে সেই দেশে এই স্বাধীনতার মাসে ৭ জন বীর শ্রেষ্ঠসহ লাখো শহীদের আত্মা নিরবে কাঁদে। যে দেশে মানুষের ভোট দেয়ার অধিকার নেই; স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও চলাফেরার স্বাধীনতা নেই সেই দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা কতটুকু স্বাধীন তা ভাববার সময় এসেছে। বিবৃতিতে বুলু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মহান অর্জনকে যারা কালিমালিপ্ত করে অবৈধ পন্থায় দেশ শাসন করতে ক্ষমতাবান, জনগণ কোনদিন তাদের ক্ষমা করবে না। এটাই ইতিহাস। তাই আমরা মনে করি-স্বাধীনতার প্রকৃত মূল্য জনগণকে ফিরিয়ে দিতে অর্থাৎ বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা, নাগরিকের সুরক্ষা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠাকল্পে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা অবসানে আলোচনার মাধ্যমে তা উত্তরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার। অন্যথায় জনগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বৈরতন্ত্রের পতন ঘটাবেই ইনশাআল্লাহ। স্বাধীন দেশে আমরা যেন আরো বেশী মাত্রায় পরাধীন হয়ে আছি। গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অর্থই হলো-জনগণের, জনগণের দ্বারা এবং জনগণের জন্য পরিচালিত শাসন ব্যবস্থা। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে গণতন্ত্রের এই সজ্ঞাটি এখন মূল্যহীন। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার প্রবল বাসনাই আজ দেশকে চরম ও ভয়াবহ সংকটে নিপতিত করেছে। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ২০ দলীয় জোটসহ দেশবাসী হতাশ হয়েছে; কেননা বিরোধী দলীয় সদর দপ্তর তিন মাস যাবৎ তালাবদ্ধ। বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সারা দেশে মিথ্যা ও রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় অগণিত নেতা-কর্মী কারান্তরীণ, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ ও  দেশব্যাপী অসংখ্য নেতা-কর্মী নিখোঁজ কিংবা গুম অবস্থায় আছেন, হাজার হাজার নেতা-কর্মী পুলিশী নির্যাতনের ভয়ে আত্মগোপনে এবং সর্বোপরি যেদেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে প্রতিনিয়ত বন্দুকযুদ্ধের নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হচ্ছে। সেই বিভীষিকাময় ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী সরকার সংকট সমাধানের কোন উদ্যোগ গ্রহণে নেতিবাচক ভূমিকায় অটল রয়েছে। আমরা সবাই এই স্বাধীন দেশের নাগরিক; আমাদের সকলেরই দায়িত্ব আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পর্বতসম যে কোন সমস্যা বা সংকট নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণ করা। আর এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের দায়িত্বই অগ্রগণ্য বলে দেশবাসী মনে করে। সালাহউদ্দিন আহমেদের সন্ধান দেয়ার দাবি জানিয়ে বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদকে এই স্বাধীনতার মাসে অপহরণ করা প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতাকেই অপহরণ করার শামিল। দেশবাসী আশা করে-পরিবারের দাবি অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সালাহউদ্দিন আহমেদকে তার পরিবারের নিকট অক্ষত অবস্থায় ফেরত দিবে এবং ২০ দলীয় জোটের অপহরণকৃত অন্যান্য নেতা-কর্মীদেরও তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দিয়ে সরকার স্বাধীনতার মাসের পবিত্রতা রক্ষা করবে। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূণ্য¯œানে যোগ দিতে আসা পুণ্যার্থীদের প্রচ- ভিড়ে পদদলিত হয়ে নারী ও শিশুসহ ১০ জনের প্রাণহানি এবং অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার ঘটনায় ২০ দলীয় জোট গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *