বেনাপোল স্থলবন্দরে পর্যাপ্ত ক্রেন ও ফরক্লিপ না থাকায় পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে চাহিদামতো ক্রেন ও ফরক্লিপের দাবিতে আগামী ১৭ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি।
১৭ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বেনাপোল বন্দরে পণ্য পরিবহন বন্ধ
শনিবার (১৪ মে) বেলা ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আজিম উদ্দিন গাজী।
এ সময় তিনি জানান, বেনাপোল বন্দর দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ হওয়া সত্ত্বেও এখানে ভারী পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য পর্যাপ্ত ক্রেন ও ফরক্লিপ নেই। আবার যেগুলো রয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটা ভালো থাকলেও পণ্য খালাস করতে গিয়ে বারবার নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া ক্রেন ও ফরক্লিপ চালকরাও অদক্ষ। এতে বন্দরে আমদানিকৃত ভারী পণ্য খালাস করতে দীর্ঘদিন সময় লেগে যাচ্ছে।
এতে ব্যবসায়ীরা এ বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদারকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানালেও তিনি বিষয়টি আমলে নেননি। তাই বাধ্য হয়ে আগামী ১৭ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বেনাপোল বন্দরে জায়গা না থাকায় প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় সাত হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে এক মাস ধরে ভারতের বনগাঁ কালিতলা পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এর জন্য ট্রাকপ্রতি প্রতিদিন তিন হাজার রুপি লোকসান গুনতে হচ্ছে।
বন্দরে জায়গা না পেয়ে আমদানি পণ্যের ট্রাক মাসের পর মাস পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে মন্তব্য করে বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, অবশেষে বাধ্য হয়ে এসব পণ্য কাদাপানির মধ্যে নামাতে হচ্ছে।
বন্দরে প্রায় সবকটি ক্রেন ও ফরক্লিপ অকেজো জানিয়ে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান বলেন, যে ক্রেন ও ফরক্লিপ একটু ভালো আছে, সেগুলোও বারবার নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা যায় না।
তবে স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, বন্দরের উন্নয়নকাজ চলমান। তবে এসব শেষ হতে আরও দু-বছর সময় লাগবে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন ক্রেন ও ফরক্লিপ কিনতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বেনাপোল বন্দরে ক্রেন ও ফরক্লিপ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মিল্টন জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বর্তমানে অধিক পরিমাণে পিডিপি (বিদ্যুৎ টাওয়ারের মালামাল) অ্যাঙ্গেল আমদানি হচ্ছে। এই টিটিবি অ্যাঙ্গেল ওঠাতে-নামাতে গিয়ে তাদের বেশ কিছু ক্রেন ও ফরক্লিপের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। ফলে পণ্য ওঠাতে-নামাতে সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া এ বন্দরে ৬টি ক্রেনের মধ্যে ৩টি সচল রয়েছে। ১০টি ফরক্লিপের মধ্যে ৮টি সচল রয়েছে। খুব দ্রুত আরও ২টি ক্রেন আনা হবে।
