ছাদ থেকে পড়ে নয়, চিরকুট লিখে জাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

Slider জাতীয়


হলের ছাদ থেকে পড়ে নয়, চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিত কুমার বিশ্বাস।
ছাদ থেকে পড়ে নয়, চিরকুট লিখে জাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাদ থেকে লাফ দেন ওই শিক্ষার্থী।

মৃত্যুর আগে চিরকুটে অমিত লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মস্তিষ্কই মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমি নিজেই নিজের শত্রু হয়ে পড়েছি অজান্তেই। নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত। আর না। এবার মুক্তি চাই।

প্রিয় মা, বাবা, ছোটবোন, সবাই পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’

এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাদ থেকে লাফ দেন ওই শিক্ষার্থী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।

বিকেল সাড়ে ৫টায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) দায়িত্বরত চিকিৎসক ইফরান বলেন, ‘চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। ইন্টারনাল ব্লিডিং ও মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান হৃদয় বলেন, আমি তিন তলায় থাকা অবস্থায় ভারি কিছু ছাদ থেকে পড়ার শব্দ শুনি। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে অমিতকে পড়ে থাকতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে হলের কিছু ছাত্রের সহায়তায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে আসি। সেখান থেকে তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

অমিতের রুমমেট, একই বিভাগের শিক্ষার্থী রবিন ঘোষ বলেন, অমিত খুবই ভালো ছেলে। তার কোনো ধরনের হতাশা ছিল না। ও নিয়মিত মেডিটেশন করত। তবে ইদানিং একটু অসুস্থ ছিল। এছাড়া কোনো ধরনের সমস্যা ছিল না। আজকে দুপুরে আমরা বন্ধুরা মিলে একসঙ্গেই খাবার খেয়েছি। অমিতও আমাদের সঙ্গে ছিল। পরে সে হলে চলে আসে। কিছুক্ষণ পর শুনি সে ছাদ থেকে পড়ে গেছে।

শহীদ রফিক জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ঘটনা শুনে আমি তাৎক্ষণিক এনাম মেডেকেলের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাই। আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছি। কিন্তু তাকে বাঁচাতে পারিনি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গাড়িতে করে তাকে খুলনায় তার গ্রামের বাড়িতে পাঠাব। তার সঙ্গে সহপাঠীরাও যাবে।

নিহত অমিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। শহীদ রফিক জব্বার হলের ৩১৫ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি খুলনায়। বাবা অজয় কুমার বিশ্বাস বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে কর্মরত আছেন। অমিত পরিবারের একমাত্র সন্তান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *