বাড়িতে সিজার করা সেই পশুর চিকিৎসক গ্রেফতার

Slider বাংলার আদালত


নেত্রকোনা: নেত্রকোনার বারহাট্টায় প্রসূতিকে সিজার করা সেই পশু চিকিৎসক আবুল কাশেমকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (০৬ মে) দুপুরে নেত্রকোনা আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বারহাট্টা থানার ওসি লুৎফুল হক।

তিনি জানান, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই থানায় মামলা নিয়েছেন। মৃত প্রসূতির স্বামী মহসিন মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেন। অভিযুক্ত পশু চিকৎসক একই উপজেলার জীবনপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মামলা ছাড়াই কমিটি গঠন হলেও রাত পর্যন্ত গ্রেফতারের কোনো খবর না থাকলেও ওসি বলেন রাতেই ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।

এর আগে উপজেলা প্রশাসন নিজ উদ্যোগে অভিযোগ ছাড়াই বৃহস্পতিবার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সন্ধ্যায় ওই এলাকা পরিদর্শন করেন। গত বুধবার চন্দ্রপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে শরীফা আক্তার নামে এক প্রসূতিকে সিজার করলে নবজাতকসহ মারা যান ওই গৃহবধূ। শরীফা বারহাট্টা সরকারি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পাস করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর এলাকায় বিয়ে হয় তার। সন্তান প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে ঈদের আগে গত সপ্তাহে চন্দ্রপুর বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাকে। বাবার বাড়িতে পশু ডাক্তারের করা সিজারের পর নবজাতকসহ মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

পরদিন বৃহস্পতিবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা চৌধুরী ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিহাব উদ্দিন।

প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজহারুল ইসলাম এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তদন্ত কমিটির সদস্যরা। সেখানে উপস্থিত এলাকাবাসী, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

তদন্ত কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সবদিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্তকেও জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তার সনদপত্র দেখাতে বলা হবে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার মূল কারণ উদঘাটন করা হবে। কমিটির অপর সদস্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা চৌধুরী বলেন, তদন্তে দোষী প্রমাণ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *