দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে তাইজুলের ১৫০, দক্ষিণ আফ্রিকার ৪৫৩

Slider খেলা


প্রথম ম্যাচে দলে সুযোগ মেলেনি। শেষ তথা পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের একাদশে জায়গা পেয়েই সাদা পোশাকে রাঙালেন টেস্ট স্পেশালিস্ট তাইজুল ইসলাম। দশমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেটে দশ উইকেট শিকারের পাশাপাশি টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫০ তম উইকেটের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন অভিজ্ঞ এ স্পিনার। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে তাইজুলের চেয়ে বেশি উইকেট কেবল সাকিব আল হাসানের। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ৫৯ ম্যাচে নিয়েছেন ২১৫ উইকেট। তবে তার এমন অনন্য কীর্তির দিনেও বলতে গেলে স্বাগতিকদের রানপাহাড়ে চাপা পড়েছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে তাইজুলের ১৫০, দক্ষিণ আফ্রিকার ৪৫৩

পোর্ট এলিজাবেথে সব মিলিয়ে টেস্ট ম্যাচ হয়েছে ৩২টি। যেখানে প্রথম ইনিংসে গড় রান ৩১২-এর কিছু বেশি। বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে করেছে ৪৫৩। স্বাগতিকরা সেই হিসেবে রানের পাহাড়ই গড়েছে।

প্রথম দিনের ৫ উইকেটে ২৭৮ রান নিয়ে শনিবার (৯ এপ্রিল) খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কাইল ভেরাইন্নে ও উইয়ান মুল্ডার দুজনে মিলে দিন শুরু করেন। তবে দলীয় ৩০০ রানে খালেদের শিকার হয়ে ফিরে যান ভেরাইন্নে।

আগের ওভারেই ওভারথ্রো করে দক্ষিণ আফ্রিকান উইকেটরক্ষক ব্যাটার কাইল ভেরাইন্নের সঙ্গে একচোট কথাকাটাকাটি হয়েছিল খালেদ আহমেদের। আম্পায়ার এসে পরে সাবধানী কিছু একটা বলছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হককেও। পরে দেখা যায়, ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে নেমে মুশফিককে কিছু একটা বলছেন পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডও।

খালেদ তাতিয়ে দেওয়ার পরই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন ভেরাইন্নে। ফিরতি ওভারে খালেদকে পেতেই একটি বাউন্ডারিও হাঁকিয়ে সতীর্থদের বাহবাও পাচ্ছিলেন। কিন্তু পরের বলেই স্টাম্প উপড়ে গেল। ফিরতে হলো খালেদের ওপর অযথা মেজাজ হারিয়ে মারতে গিয়েই। লড়াইয়ে শেষমেশ জয়ী হলেন খালেদই।

তবে এরপর বাধা হয়ে দাঁড়ান মহারাজ। মুল্ডারকে নিয়ে দারুণ জুটি গড়ে তোলেন তিনি। দুজনই ওয়ানডে মেজাজে রান তুলতে থাকেন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েন টাইগার বোলাররা। টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন মহারাজ। কিন্তু এরপরই খেই হারান মুল্ডার। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে তাইজুল ইসলামের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। এর খানিক পরই প্রথম সেশনের খেলা শেষ হয়।

এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা পেসারদের চারণভূমি, এ কথা মানুষের মুখে মুখে ঘোরে প্রায়ই। সে বিবেচনাতেই হয়তো প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের একাদশে জায়গা মেলেনি টেস্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে পরিচিত স্পিনার তাইজুল ইসলামের। দ্বিতীয় টেস্টে তাসকিন না থাকায় কপাল খোলে তার। দলে ফিরে তিনি বুঝিয়ে দিলেন তার গুরুত্ব, নিলেন পাঁচ উইকেট।

দক্ষিণ আফ্রিকায় যে স্পিনাররাও জয়-পরাজয়ে বড় অবদান রাখতে পারেন তার প্রমাণ তো কেশব মহারাজই। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে একাই টাইগারদের ৭ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হন তিনি। ওই ম্যাচের পর বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টও হয়তো তাইজুলের অভাব উপলব্ধি করে, এদিকে তাসকিন না থাকায় একাদশে সুযোগও পেয়ে যান তিনি। তার ওপর রাখা আস্থার প্রতিদান প্রোটিয়াদের ৫ ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরানো ।

সুযোগ পেয়ে শনিবার (৯ এপ্রিল) ডিন এলগারকে দিয়ে শুরু তাইজুলের। তিনি এরপর আরও নিয়েছেন কিগান পিটারসেন, রায়ান রিকেলটন, উইয়ান মুল্ডার, কেশভ মহজারাজ ও সিমন হারমারের উইকেট। তাইজুলের শিকার হওয়া প্রত্যেক ব্যাটারই বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন বাংলাদেশের জন্য। এর মধ্যে এলগার ৭০ রানে, পিটারসেন ৬৪ রানে, রিকেলটন ৪২ রানে, মুল্ডার ৩৩ রানে ও মহারাজ ৮৪ রানে আউট হয়েছেন। হারমার করেছিলেন ২৯ রান।

৩৬ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ইনিংসের হিসাবে এটি তাইজুলের দশমবারের মতো ৫ বা তার চেয়ে বেশি উইকেট শিকারের ঘটনা। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে তাইজুলের চেয়ে বেশি উইকেট কেবল সাকিব আল হাসানের। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ৫৯ ম্যাচে নিয়েছেন ২১৫ উইকেট। ৩৩ ম্যাচে ১২৫ উইকেট নিয়ে তাইজুলের পিছু পিছু ছুটছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *