ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ দোনেৎস্কের ক্রামাতোরস্ক শহরের একটি রেলস্টেশনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রুশ বাহিনীর এ হামলায় অন্তত ৩০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। তবে রেলস্টেশনে হামলার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে রাশিয়া।
ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় রেল পরিষেবা বিভাগ জানিয়েছে, শুক্রবার সকালের দিকে পরপর ২টি রকেট আঘাত হানে ওই স্টেশনটিতে। এ সময় স্টেশনে অনেক মানুষ অপেক্ষা করছিলেন।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের যে কয়েকটি রেলস্টেশন এখনও যাত্রীসেবা দিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে ক্রামাতোরস্ক শহরের ওই স্টেশনটি অন্যতম। রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় যাত্রীদের নিরাপদস্থানে সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ক্রামাতোরস্ক।
দোনেৎস্কের গভর্নর পাভলো কিরিলেনহো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে জানান, দোনবাস (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক) এলাকায় রুশ ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে সংঘাত বাড়তে থাকায় বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নিতে কয়েকটি ট্রেন অপেক্ষা করছিল ক্রামাতোরস্ক স্টেশনে।
কিরিলেনহো বলেন, ট্রেনগুলোতে ওঠার জন্য যখন যাত্রীদের ব্যস্ততা শুরু হয়েছে, সে সময়েই ২ টি রুশ রকেট আঘাত হানে এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে। টেলিগ্রাম পোস্টে কিরিলেনহো আরও বলেন, পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিস বিভাগের কর্মীরা ইতোমধ্যে স্টেশনটিতে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন।
ক্রামাতোরস্ক হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ইউরোপের শীর্ষ কূটনীতিক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট জোসেফ বোরেল। শুক্রবার এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, ক্রামাতোরস্ক রেলস্টেশনে রাশিয়ার নির্বিচার রকেট হামলার নিন্দা জানাচ্ছি।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। অভিযান শুরুর দুই দিন আগে অর্থাৎ ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুই ভূখণ্ড দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। এই দুই ভূখণ্ডকেই একত্রে দোনবাস রিপাবলিক বলা হয়।
ইতোমধ্যে ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনাদের দোনবাসে জড়ো করা শুরু করেছে রাশিয়া। দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে দিন দিন তীব্র হচ্ছে রুশ-ইউক্রেন সেনাদের লড়াই।
এদিকে পশ্চিমা বন্ধু দেশগুলোর কাছে আরও অস্ত্র এবং মস্কোর বিরুদ্ধে বড় নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, অস্ত্র তা পাঠালে পূর্ব ইউক্রেনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে রুশ বাহিনী।
বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রসমূহের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে কুলেবা বলেন, ‘(রাশিয়াকে ঠেকাতে) আমাদের অস্ত্র প্রয়োজন। আপনারা আমাদের দ্রুত সাহায্য করুন না হলে অনেক লোক মারা যাবে।’