সবুজবাগের বেগুনবাড়ি এলাকায় স্ত্রী তানিয়া আফরোজ ও দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট মো. ময়নুল ইসলাম। কিছুদিন আগে মুগদা মেডিক্যাল থেকে তার ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজে বদলি হয়। সেই বদলির কথা জানতেন তাদের বাসায় এসি লাগিয়ে যাওয়া মেকানিক রিফাত আলম বাপ্পী। স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে আরো দুজনকে নিয়ে ডাকাতির পরিকল্পনা করে বাপ্পী। গত শনিবার (২৬ মার্চ) সেই বাসায় দস্যুতার সময় খুন হন তানিয়া আফরোজ।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন মতিঝিল বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মো. আ. আহাদ। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় জড়িত তিন জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রিফাত আলম বাপ্পী, হৃদয় এবং রুবেল। তাদের কাছ থেকে লুট করা এক জোড়া কানের দুল ও দুটি স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করা হয়েছে।
আহাদ বলেন, ‘শনিবার বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে বাপ্পী এসি সার্ভিসিং করার কথা বলে মইনুলের বাসায় আসে। বাপ্পীই এক বছর আগে তাদের বাসায় এসি লাগিয়ে গিয়েছিল। নিচে কেঁচি গেইটে নক করলে তানিয়া নিচে নেমে আসেন। তখন স্বামী ময়নুলের সঙ্গে তানিয়ার কথা হয়। প্রথমে ময়নুল নিষেধ করলেও পরে কাজ করতে বলেন।’
আহাদ আরো বলেন, ‘প্রথমে বাপ্পী এবং হৃদয় আধা ঘণ্টার মতো এসির কাজ করে। এর কিছুক্ষণ পর রুবেল তাদের বাসায় আসে। এ সময় সে কে জিজ্ঞেস করলে রুবেল তাদের সহযোগী বলে বাপ্পী জানায়। তখন ১০ মাসের ছেলে তানভীরুলকে নিয়ে রান্নার কাজ করতে চলে যান তানিয়া।’
আরো কিছুক্ষণ পর তানিয়া রুমে ঢুকে আলমারি ও অন্যান্য জিনিসপত্র তছনছ করতে দেখেন বলে জানিয়ে আহাদ বলেন, ‘তানিয়া তখন চিৎকার শুরু করেন। এ সময় রুবেল ও হৃদয় তাকে বালিশ চাপা দেয় এবং বাপ্পী তার ব্যাগের ভেতর থাকা চাপাতি দিয়ে তানিয়ার মাথায় একাধিকবার আঘাত করে। বাচ্চাদের মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে বেঁধে রেখে মোবাইল ও স্বর্ণালংকার লুট করে।’
আসামিদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বাপ্পীকে তার নিজ বাড়ি ঝালকাঠির নলসিটি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর রামপুরা থেকে হৃদয় এবং রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। বাপ্পীর ৫ দিনের রিমান্ড আদালত মঞ্জুর করেছে। হৃদয় এবং রুবেলকেও আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড চাওয়া হবে।’
দস্যুতার উদ্দেশেই তারা সেখানে গিয়েছিল জানিয়ে আহাদ বলেন, ‘জিনিসপত্র লুট করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। তানিয়া বাঁধা দেয়া ও চিৎকার করায় তারা তাকে খুন করে। বাপ্পী জানত তার স্বামী ময়নুলের বদলি হয়েছে। তিনি বাসায় নেই। বাপ্পী আগেও এসি ঠিক করতে গিয়ে বিভিন্ন বাসায় চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছে সে।’