ময়মনসিংহে স্কুলছাত্রী শ্রীজার মৃত্যু ‘টক অব দ্য টাউন’

Slider নারী ও শিশু

কলেজ শিক্ষক ও স্কুুল শিক্ষিকা অর্পণা দে’র কন্যা দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রী শ্রীজার মৃত্যু নিয়ে ময়মনসিংহ নগরী ‘টক অব দ্য টাউন’এ পরিণত হয়েছে। দিনভর আলোচনায় ছিল রাস্তায় পড়ে থাকা কন্যার লাশকে জড়িয়ে ধরে বাবা-মার আহাজারি। এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখে হাজার হাজার মানুষ কেঁদেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে তুমুল ঝড়। অনেকে বলেছেন, কোন বাবা-মা’র এমন কষ্ট যেন সইতে না হয়। একজন লিখেছেন কন্যা হারা পিতার কান্না, মায়ের নিস্তব্ধতা, আহাজারি। আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন- এটি হত্যা, না আত্মহত্যা। এই প্রশ্নের কিছুটা হলেও উত্তর মিলেছে শ্রীজা’র মৃত্যুর আগে তার দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে।

নিহত অর্কপ্রিয়া ধর শ্রীজা (১৬) ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। সে ময়মনসিংহ কমার্স কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক, গবেষক ও ছড়াকার স্বপন ধরের মেয়ে। গত রোববার দুপুর ২টার দিকে নগরীর ব্যস্ততম স্বদেশি বাজার এলাকায় ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে সে। আত্মহত্যার আগে নিজের ফেসবুকে টাইমলাইনে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসও দেয় অর্কপ্রিয়া। সে স্ট্যাটাসে লিখেছে, “যারা বলেন, বাবা-মার সঙ্গে একটু ঝগড়া হইলেই মইরা যাওয়া লাগে? ৩ বছর ধরে সুইসাইডাল চিন্তায় ভুইগা আমার এতদিনে সাহস হইসে। আপনার মনে হয় আমার খুব ইচ্ছা ছিল মরার? বাধ্য হইসি। আপনাদের তৈরি সমাজ আর পেরেন্টিং এর কারণে..।’
শ্রীজা ধরের মা অর্পণা দে জানান, এক সপ্তাহ ধরে সে অসুস্থ ছিল। শুধু বলতো তার মাথাব্যথা। পড়া মনে থাকে না। তাকে চিকিৎসক দেখানো হয়েছে। সকালে তাকে বাসায় রেখে স্কুলে চলে যান তিনি। পরে জানতে পারেন তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে দেখা যায় যে, দুপুর একটার দিকে শ্রীজা একাই ছাদে গেছে। তার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে মনে হয় সে আত্মহত্যা করেছে। ছাদ থেকে একটি স্কুল ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *