৭৫ পরবর্তী সময়কে ‘কালো মেঘ’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেটি কেটে গেছে। টানা তিন মেয়াদে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে।
দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় উন্নয়ন দৃশ্যমান : প্রধানমন্ত্রী
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক ভার্চুয়াল নাগরিক সভায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা সময় একটি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল। এখন আরেকটি সমস্যা… যে একটি যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে। সেখানে অন্যরা মদদ দিচ্ছে। যার ফলে একটা অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে আমরা যাচ্ছি। ফলে বিদেশে যেমন তেলের দাম বেড়ে গেছে, নানা রকম সমস্যা হচ্ছে। তার জন্য কিছু সমস্যা আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, তবে আমি বিশ্বাস করি, এইগুলো আমরা মোকাবিলা করতে পারব। কারণ, করোনার সময় আমি মানুষকে আহ্বান করেছিলাম-আমাদের মাটি আছে, যে যা পারেন আপনারা ফসল ফলান। এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। যেকোনো একটা যুদ্ধাবস্থা বা করোনায় যে আর্থিক মন্দা বিশ্বব্যাপী এর ফলে খাদ্য অভাব দেখা দিতে পারে। দ্রব্যমূল্য বাড়তে পারে। কিন্তু আমরা যদি আমাদের দেশে, উৎপাদন বাড়াতে পারি, নিজেদের খাবারের ব্যবস্থা নিজেরাই করে রাখতে পারি। তাহলে এটা আমাদের জন্য খুব একটা সমস্যা হবে না।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দেশে থাকবেন। ওই দেশের আইন মেনে চলবেন। নিয়ম মেনে চলবেন। যাতে করে সেই দেশের কাছে আমাদের মুখটা বড় থাকে। আমাদের দেশের সম্মান যেন কখনো নষ্ট না হয়। আপনাদের জন্য স্মার্ট কার্ড হতে সবধরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও আছে। যেসব দেশে আমাদের অনিয়মিত শ্রমিক রয়েছে, তাঁরা যেন নিয়মিত হয় সেটার আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
করোনার সময় আটকে পড়াদের জন্য সরকার বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করেছিল বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমরা যেখানেই, যেভাবেই থাকি না কেন, মেধা, মনন ও শক্তি দিয়ে এগিয়ে যাব। বিশ্বে আমরা মাথা উঁচু করে চলব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ১৩ বছরে বাংলাদেশের পরিবর্তনটা আপনারা দেখেছেন। এই ১৩ বছরে একটানা গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত ও আওয়ামী লীগ সরকারে ছিল বলেই দেশের উন্নতি হয়েছে। কারণ এই দেশটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া, আমাদের আন্তরিকতা ও দায়বদ্ধতা আছে, যে এই দেশটাকে উন্নত ও সমৃদ্ধ হিসাবে গড়ে তোলার। দেশের মানুষ মর্যাদার সঙ্গে বাস করবে।
১৯৯৬ সালের ক্ষমতা গ্রহণের পরে দেশের জনগণের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, দেশের জনগণের রায় নিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। তারপর থেকে এই পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের ভোট এবং সহযোগিতায় রাষ্ট্র পরিচালনা করার সুযোগ পেয়েছি। আমার দৃষ্টিতে এটা হলো জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। কারণ ক্ষমতা আমার কাছে কোন ভোগের বস্তু না, এটা হচ্ছে জনগণের সেবা করবার সুযোগ। যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন, তা পূর্ণ করা।
তিনি বলেন, পরপর তিনবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করেছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে পঁচাত্তরের পরে দেশে অস্থিরতা ছিল। গণতান্ত্রিক ধারা কখনোই অব্যাহত ছিল না। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে ১৩ বছর আমরা পূর্ণ করেছি। একটানা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকে বাংলাদেশের উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। সেই জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই দেশবাসীর প্রতি। কৃতজ্ঞতা জানাই প্রবাসীদের প্রতিও। কারণ আপনাদের কাছ থেকেও ব্যাপক সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছি। তাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি।
সরকার প্রধান বলেন, এই ১৩ বছর আগেও প্রবাসে বাংলাদেশি নাগরিকেরা সম্মান তেমন পেত না। কিন্তু আজকে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ শুনলে সবাই মর্যাদার চোখে দেখে। সবাই সমীহ করে। বাংলাদেশ আবার তার সেই হারানো গৌরব ফিরে পেতে শুরু করেছে। এটা ধরে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।