এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের এক মাসের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) চলতি বছরের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়।
২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলে এবার পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ।
গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষা অন্যান্য বছরের মতো হয়নি। পরীক্ষা হয় শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে। আর আবশ্যিক বিষয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বাদ দেয়া হয় চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষাও।
এ পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন, উত্তীর্ণ হয় ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন। আর জিপিএ-৫ পান ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা হবে। ওই দিনই বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আর্টস ও সোশ্যাল সায়েন্স অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা হবে। পরদিন শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অনুষদে ভর্তি পরীক্ষা হবে। একই দিনে সায়েন্স ও টেকনোলজি অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নেয়া হবে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও খুলনায় একযোগে এসব ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে মৌখিক পরীক্ষা হবে ঢাকায় বিইউপির ক্যাম্পাসে।
এ ছাড়া চলতি মাসের ১৮ তারিখ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) ভর্তি পরীক্ষাও হবে।
এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল ও ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হলেও এখনও ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সংগঠন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। সাধারণত এ সংগঠন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণত একই দিনে যেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ না পড়ে সে জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা বসে বিষয়টি সমন্বয় করা হয়।’
চলতি বছরের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তারিখ নির্ধারণ করে বিষয়টি আমাদের জানায়। এরপর আমরা বসে সমন্বয় করি। এখনও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ জানানো হয়নি।’
মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষা ১ এপ্রিল
আগামী ১ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সারা দেশে একযোগে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষা ২২ এপ্রিল
গত ৯ মার্চ সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বিডিএস ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ২২ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সারা দেশে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
গত বছর প্রথমবারের মতো ২০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া দ্বিতীয়বারের মতো সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
গুচ্ছ পদ্ধতির সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
গুচ্ছ পদ্ধতির বাইরে ছিল যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
গত বছর পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এরা হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।